কারা হাসপাতালে চিকিৎসক নিয়োগে বাধা ‘করোনা ভাইরাস’: হাইকোর্টে প্রতিবেদন

সুপ্রিম কোর্ট

বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসজনিত কারণে জরুরি সেবা প্রদানের জন্য বেশ কিছু চিকিৎসক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করছেন। এ কারণে দেশের কারা হাসপাতালগুলোতে এই মুহূর্তে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক নিয়োগ বা সংযুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না বলে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।

বুধবার (৪ মার্চ) বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আইন অনুবিভাগ থেকে এই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. জে আর খান রবিন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে আদালতে প্রতিবেদন তুলে ধরেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসজনিত কারণে জরুরি সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে বেশ কিছু চিকিৎসক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করছেন। এ অবস্থায় একসঙ্গে বেশি সংখ্যক চিকিৎসককে কারা-হাসপাতালে পদায়ন করলে সাধারণ হাসপাতালগুলোর নিয়মিত চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হতে পারে। তাই পরবর্তীতে আসন্ন করোনা ভাইরাস সংকট নিরসনের পরে পর্যায়ক্রমে কারা হাসপাতালে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে।

এদিকে হাইকোর্টের আদেশের পর গত ১৩ জানুয়ারি ১৩ জন, ২১ জানুয়ারি দুই জন এবং ৩ মার্চ ৫৩ জন চিকিৎসককে কারা হাসপাতালে সংযুক্তির তথ্য ওই প্রতিবেদনের মাধ্যমে আদালতকে জানানো হয়েছে। 

এর আগে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি দেশের কারা হাসপাতালগুলোর শূণ্য পদে ১১৭ জন চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে দ্রুত এই নিয়োগ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। সেই আদেশের ধারাবাহিকতায় এই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

প্রসঙ্গত, কারা চিকিৎসক সংকট নিয়ে দেশের কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে আদালতে রিট দায়ের করেছিলেন আইনজীবী মো. জে আর খান (রবিন)।

পরে ২০১৯ সালের ২৩ জুন জারি করা রুলে কারাগারে আইনগত অধিকার নিশ্চিতে মানসম্মত থাকার জায়গা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি হবে না এবং বন্দিদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে কারা চিকিৎসকের শূন্যপদে নিয়োগ দিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। আইন মন্ত্রণালয়,  স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (সুরক্ষা বিভাগ), স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও কারা মহাপরিদর্শককে এসব রুলের জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

এছাড়া, আদালত অপর এক আদেশে আদালত সারাদেশের সব কারাগারে বন্দিদের ধারণ ক্ষমতা, বন্দি ও চিকিৎসকের সংখ্যা এবং চিকিৎসকের শূন্য পদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন।