এক কোটি পরিবারকে বিনামূল্যে খাদ্য জোগান দেওয়ার দাবি

অন্তত তিন মাসের জন্য এক কোটি পরিবারকে বিনামূল্যে খাদ্যসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির জোগান দেওয়াসহ সরকারের কাছে ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন উদ্বিগ্ন নাগরিকরবৃন্দ। শুক্রবার (৩ এপ্রিল) গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব দাবি জানানো হয়।

উদ্বিগ্ন নাগরিকবৃন্দ এবং নাগরিক সংগঠনগুলোর পক্ষে বিবৃতি পাঠান গবেষক এবং মানবাধিকার কর্মী রেজাউর রহমান লেনিন। ফোনে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন তিনি।

উদ্বিগ্ন নাগরিকবৃন্দ এবং নাগরিক সংগঠনগুলোর পক্ষে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, আলোকচিত্রী ও লেখক ড. শহিদুল আলম, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ ৫৫ জন।
বিবৃতিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসে বিশ্বের কয়েকশ’ কোটি মানুষ এখন শুধু মৃত্যুভয় নয়, অনাহার, বেকারত্ব আর দারিদ্র্যের ভয়াবহতারও মুখোমুখি। অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের নিরাপত্তাহীনতা এমনিতেই বেশি, করোনা পরিস্থিতিতে তারা ভয়ঙ্কর অস্তিত্বের সংকটে পড়েছেন। সরকারের হিসাব অনুযায়ী, কৃষি, শিল্প আর পরিষেবা খাতে প্রায় ৬ কোটি শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে প্রায় ৫ কোটিরও বেশি সংখ্যক মানুষ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। তাদের বেঁচে থাকা নির্ভর করে প্রতিদিনের হাড়ভাঙা পরিশ্রমের ওপর। যেখানে করোনা ছাড়াই তাদের জীবন ক্ষুধা এবং অনিশ্চয়তায় বিপন্ন, সেখানে করোনার আক্রমণে এই কোটি কোটি মানুষ এখন বেকার এবং দিশেহারা। এদের বিপুল অংশের এমন কোনও সঞ্চয়ও নেই, যা তাদের অনিশ্চিত সময় পার হতে সাহায্য করবে, বরং তাদের আরও ঋণগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

আরও বলা হয়, আমরা দেখছি করোনা বিস্তারের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন রাষ্ট্র দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা ও বিশেষ বরাদ্দ ঘোষণা করেছে। কিন্তু উদ্বেগের বিষয়, বাংলাদেশে এখনও কোনও সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি এবং বরাদ্দ ঘোষণা করা হয়নি। যাদের প্রয়োজন তাদের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

বিৃবতিতে দাবি জানিয়ে বলা হয়, এই মুহূর্তে জরুরি প্রয়োজন অন্তত তিন মাসের জন্য এক কোটি পরিবারকে বিনামূল্যে খাদ্যসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির জোগান দেওয়া; এই এক কোটি পরিবারের চিকিৎসা বিনামূল্যে নিশ্চিত করা; কৃষকের ফসল-সবজি-ফলের সঠিক দাম নিশ্চিত করার জন্য সরকারের ক্রয়ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করা; সব প্রতিষ্ঠানে বেতন-মজুরি নিশ্চিত করা; ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও কৃষকদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ সহজলভ্য করা; প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বিশেষ করে রোহিঙ্গা এবং পাহাড় ও সমতলের জনগোষ্ঠীর জন্য ত্রাণ ও সরকারি সহায়তা নিরবচ্ছিন্ন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রদান করা এবং হাম-আক্রান্ত অঞ্চলে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান ও জরুরি মানবিক সহায়তা প্রদান করা।