ছুটির পর প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও কোড




বিদ্যালয়ে পাঠদান (ফাইল ছবি)ছুটির পর নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক-কর্মচারীরা এমপিও কোড পেতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর নির্দেশনা বাস্তবায়নে ছুটির মধ্যেই চলছে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ। সব চূড়ান্ত হলে ছুটির পর এক সপ্তাহের মধ্যেই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালককে কোড দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হবে, যাতে চলতি অর্থবছরেই বাজেট বরাদ্দ থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়া সম্ভব হয়।

জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করবো। মাউশির মহাপরিচালককে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ছুটির পর যাতে সময় নষ্ট না হয়।’

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছর অক্টোবরে এমপিও পাওয়া দুই হাজার ৭৩৭টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে ফাইলওয়ার্ক করছেন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সব ধরনের যাচাই-বাছাই ছুটির মধ্যেই শেষ করা হবে। আর ছুটির পর এক সপ্তাহের মধ্যে মাউশিকে সব প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে এমপিও কোড ও শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও কোড দিতে নির্দেশ দেবে মন্ত্রণালয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, 'নতুন এমপিও পাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও কোড প্রদানের প্রস্তুতি নিতে মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১০ বছর বন্ধ থাকার পর গত বছর ২৩ অক্টোবর একযোগে দুই হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করে তালিকা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এই তালিকা প্রকাশ করেন। এরপর ওই বছরের ১২ নভেম্বর ছয়টি এবং ১৪ নভেম্বর আরও একটি প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়। নতুন এমপিও পাওয়া এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের গত বছরের (২০১৯) জুলাই থেকে নির্ধারিত বেতন-ভাতা পাওয়ার কথা। কিন্তু, এমপিও তালিকা প্রকাশ করলেও বেতন-ভাতা দেওয়ার নির্দেশনা দেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কিছু প্রতিষ্ঠান মিথ্যা বা ভুল তথ্য দিয়ে এমপিওভুক্তির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। সেগুলো বাছাইয়ের কাজ প্রায় শেষ দিকে। তবে এই সংখ্যা হাতেগোনা কয়েকটি। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এসব কারণে এমপিওভুক্তির তালিকা প্রকাশ করা হলেও এমপিও কোড দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, ‘আমাদের টার্গেট এই অর্থবছরের মধ্যেই যাতে শিক্ষকরা চলতি বাজেট বরাদ্দের অর্থেই বেতন পান। তাছাড়া এই বাজেটে দিতে না পারলে টাকা ফেরত গেলে রিভাইস করা সময়সাপেক্ষ। আমরা চাই শিক্ষকরা যেন দ্রুত বেতন-ভাতা পান। ছুটির পর এক সপ্তাহের মধ্যেই আমরা মাউশিকে নির্দেশ দেবো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক-কর্মচারীদের বিপরীতে যেন বেতন কোড দিতে পারে। আমরা মাউশিকে প্রস্তুত থাকতে বলেছি।’

প্রসঙ্গত, নতুন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হলেও প্রায় ৬ মাসেও প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন কোড না দেওয়ায় বাংলা ট্রিবিউনে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ‘একটি আদেশ থামাতে পারে ৩০ হাজার পরিবারের কান্না’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পর ছুটির মধ্যেই ফাইলওয়ার্ক শুরু করা হয় বলে জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।