ঈদের দিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিকভাবেই দায়িত্ব পালন করছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। ঈদ বলে বাড়তি কোনও আগ্রহ কিংবা উচ্ছ্বাস দেখা যায়নি তাদের মধ্যে। কর্মস্থলে কেউ কেউ একা আবার কেউবা কয়েকজন মিলে গল্প করেই ঈদের দিন দায়িত্ব পালন করছেন। তবে আয়ের পথ কম থাকায় এবং প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। করোনা সংকটে লোক কম থাকায় কারও কারও ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত ডিউটি করতে হচ্ছে।
দীর্ঘ ৯ বছর ধরে বলাকা সিনেমা হলের নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করছেন রংপুরের আব্দুর রাজ্জাক। তার মতে এবার ঈদ অন্যরকম। প্রতি ঈদে সিনেমা হল খোলা থাকলেও এবার বন্ধ। রাস্তায় মানুষের আনাগোনা কম। ঈদে শেষ কবে বাড়ি গিয়েছিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন গত বছর কোরবানি ঈদের পর।
বলাকা সিনেমা হল থেকে একটু সামনে এগোলেই নীলক্ষেত বইয়ের মার্কেট। এই মার্কেটের নিরাপত্তায় আছেন পাঁচ জন কর্মী। এদের মধ্যে একজন নিরাপত্তা কর্মী জানান, এবার ঈদের কোনও আমেজ নাই। অন্যান্যবার ঈদে এখানে ডিউটিও করি আবার বাড়িতে গিয়ে বাচ্চাদের সময় দেই। করোনার কারণে সরকারের নির্দেশে প্রায় দুই মাস ধরে মার্কেট বন্ধ। এখানেই আছি আমরা সবাই।
তিনি বলেন, এবার ঈদে দেখতেছি একদম হাহাকারের মতো। কারও ভেতরে কোনও শান্তি নাই, মজা নাই। আমরা এখানে ৩০-৩৫ জন দারোয়ান আছি। মার্কেট খোলা থাকলে আমরা মোটামুটি ভালো থাকতাম। ব্যবসায়ীরা মার্কেটে আসলে সালাম দিলেও ২০-৫০ টাকা সালামি দিয়ে যায়। এবার তো কিছুই নাই।
তিনি আরও বলেন, দোকান বন্ধ, মার্কেট বন্ধ। ব্যবসায়ীরা বেতন দিতে পারলেও বোনাস দিতে পারেনি। দিবেও বা কেমনে।
এসময় এখানে গল্পরত একটি বেসরকারি ব্যাংকের এটিএম বুথের নিরাপত্তাকর্মী জানান, তাদের এখন ১৬ ঘণ্টা ডিউটি করতে হয়। তিনি জানান- কেউ কেউ ৮ ঘণ্টা ডিউটি করলেও তাকে ১৬ ঘণ্টা ডিউটি করতে হয়। এছাড়া খাবারের ব্যবস্থা মেসে, সেখান থেকে খেয়ে আসেন তিনি। তারপরও সবকিছু নিয়ে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, যা আছে এ নিয়ে বেশ ভালো আছি।