২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা বেশি আক্রান্ত, মৃত্যুহারে ঝুঁকিতে ষাটোর্ধ্বরা

করোনাভাইরাসদেশে সবচেয়ে বেশি ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আর বেশি মৃত্যু হয়েছে যাদের বয়স ৬১ বছরের বেশি। এছাড়া নারী-পুরুষ বিবেচনায় কোভিড-১৯ রোগীদের ২৯ শতাংশ নারী ও বাকি ৭১ শতাংশ পুরুষ।
শুক্রবার (৫ জুন) করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা শনাক্ত রোগীদের বিশ্লেষণে ওপরের তথ্যগুলো জানান। তিনি বলেন, ‘গত ৪ জুন পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া রোগীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। আর মৃত্যু বেশি হচ্ছে ষাটোর্ধ্বদের।’

বয়স বিবেচনায় শনাক্তের হার (৫ জুন পর্যন্ত)
* ৬০ বছরের বেশি: ৭ শতাংশ
* ৫১-৬০ বছর: ১১ শতাংশ
* ৪১-৫০ বছর: ১৭ শতাংশ
* ৩১-৪০ বছর: ২৭ শতাংশ
* ২১-৩০ বছর: ২৮ শতাংশ
* ১১-২০ বছর: ৭ শতাংশ
* ১-১০ বছর: ৩ শতাংশ।

কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৮ শতাংশের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছর। এরপরেই ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বেশি (২৭ শতাংশ)। এসব বয়সীদের বেশি সচেতনতা ও সতর্কতার পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। তিনি মনে করেন, তারা কর্মস্থলে বেশি থাকেন। ফলে তাদের বাইরে বেশি বের হতে হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, ‘কাজ কিংবা বয়স যে কারণেই হোক, তরুণরা সচেতনতা বা সতর্কতা ঠিকভাবে গ্রহণ করেন না। এজন্য ২১ থেকে ৩০ এবং ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের সতর্ক ও সচেতন থাকার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করি। আপনাদের কারণে পরিবারের সদস্যরা ঝুঁকিতে পড়তে পারে।’

বয়স বিবেচনায় মৃত্যুর হার

* ১-১০ বছর: দশমিক ৮২ শতাংশ
* ১১-২০ বছর: ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ
* ২১-৩০ বছর: ৩ দশমিক ৪ শতাংশ
* ৩১-৪০ বছর: ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ
* ৪১-৫০ বছর: ১৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ
* ৫১ থেকে ৬০ বছর: ২৯ দশমিক ৬২ শতাংশ
* ৬১ বছরের বেশি: ৩৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ষার্টোর্ধ্বদের মধ্যেই মৃত্যুর হার বেশি দেখা যাচ্ছে। তাই বয়োজ্যেষ্ঠদের অনেক বেশি সতর্ক ও সচেতন থাকতে বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি ভিটামিন সি এবং জিংক সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি। তার মন্তব্য, শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়ামসহ মানসিক স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে হবে।
বাইরে বের হলে আবশ্যকভাবে মাস্ক পরতে বলেছেন অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তার পরামর্শ, বারবার সাবান পানি দিয়ে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়ার পাশাপাশি জনসমাবেশ এড়িয়ে চলতে হবে। তিনি বলেন, ‘আপনার ওপর পরিবারের অন্যদের সুস্থ থাকা নির্ভর করছে। কাজেই সতর্ক ও সচেতন হোন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধসহ সবাইকে নিরাপদে রাখুন।’