যুক্তরাষ্ট্রে কনস্যুলেট ভবন ক্রয়ের দুর্নীতি তদন্তে আইনি নোটিশ

আইন নোটিশ

যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে বাংলাদেশ কনস্যুলেট ভবন এবং কনসাল জেনারেলের বাসভবন ক্রয় সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লস অ্যাঞ্জেলসের সাবেক কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহাকে ই-মেইলের মাধ্যমে এই নোটিশ  পাঠানো হয়।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) সুপ্রিম কোর্টের দুই জন আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. হুমায়ুন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার এই নোটিশ পাঠান।

নোটিশে বলা হয়, ভবন দুটি ক্রয়ের ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠার কারণে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন অনুযায়ী  অভিযোগের যথাযথ অনুসন্ধান, তদন্ত এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুদকের আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কেননা, বিষয়টির সঙ্গে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি জড়িত। তাছাড়া এসব অভিযোগের যথাযথ তদন্ত এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা, সেটা জানবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে। এত বড় ধরনের একটি দুর্নীতির অভিযোগে কোনও ধরনের দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে দুর্নীতিবাজরা অনুপ্রাণিত হবে এবং  প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতিবিরোধী স্লোগান ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।

একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে নোটিশে আরও  বলা হয়, লস এঞ্জেলসে বাংলাদেশের কনস্যুলেট অফিস স্থাপনের জন্য গত বছরের জুন মাসে একটি বাড়ি কেনা হয়েছে। সেই বাড়িটির ক্রয় মূল্য দেখানো হয়েছে ৮৩ লাখ মার্কিন ডলার, যা বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে ২৩ গুণ বেশি। অন্যদিকে কনস্যুলেট অফিসের কনসালের বাসভবনের জন্য আরেকটি বাড়ি কেনা হয়েছে। সেই বাড়িটি কেনা হয়েছে ৩২ লাখ মার্কিন ডলারে, যেটার বর্তমান বাজার মূল্য ২০ লাখ ডলারের বেশি হওয়ার কথা নয়। কনস্যুলেট অফিস এবং আবাসিক ভবন বাজারমূল্যের চেয়েও অনেক বেশি দামে ক্রয় করায় বিষয়টি নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে এবং বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনে এ বিষয়ে একটি অভিযোগ করা হয়েছে।

সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে লস অ্যাঞ্জেলসের কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহাকে ঢাকায় নিয়ে এসে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। কিন্তু পরবর্তীতে এত বড় দুর্নীতির ঘটনার তদন্ত অথবা যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন, অথবা বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনও ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বিষয়টি জনস্বার্থের পরিপন্থী, সব প্রকার দুর্নীতির মাধ্যমে জনগণের ট্যাক্সের টাকা আত্মসাৎ করা হয়, যা রাষ্ট্রের জন্য চরম ক্ষতিকর।

তাই নোটিশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে এবং কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, তা জানাতে বলা হয়েছে। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।