রাজধানীতে ট্রাফিক সিগন্যাল ফিরছে আগের রূপে

কারওয়ান বাজার সিগন্যালএকটা সময় রাজধানীর ফার্মগেট থেকে কারওয়ান বাজার সিগন্যাল পার হতে প্রায় আধঘণ্টা বা তার বেশি সময় অপেক্ষা করতে হতো। করোনার জন্য চলাচলে নিয়ন্ত্রণ থাকায় সেই জ্যাম ছিল না। কিন্তু পাঁচ মাসের ব্যবধানে রাস্তায় ব্যক্তিগত ও গণপরিবহনের সংখ্যা বাড়ায় ওই এলাকা পার হতে প্রায় এখন ১৫ মিনিট লাগছে। রাজধানীর সড়কগুলোতে এভাবেই বাড়ছে গাড়ির চাপ। এরসঙ্গে ক্রমশ ট্রাফিক সিগন্যালও ফিরছে আগের রূপে।

সোমবার (১৭ আগস্ট) সকালে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি বড় মোড় পার হতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে কমপক্ষে দুটি সিগন্যাল। যার ফলে প্রত্যেকটি মোড় পার হতে প্রায় গড়ে ১০-১৫ মিনিট সময় লাগছে। এদিকে গণপরিবহনে থাকা যাত্রীরা বলছেন, আস্তে আস্তে সব অফিস খুলে দিয়েছে। মানুষের যাতায়াত বেড়েছে। আগে একটি গাড়িতে ৪০-৫০ জন মানুষ যেতো, এখন সেখানে যাচ্ছে ২০-২৫ জন। এজন্য একই গন্তব্যে যাওয়ার জন্য গাড়ি বেশি লাগছে। তাই কিছুটা জ্যাম হওয়া স্বাভাবিক। আর রাস্তায় কর্তব্যরত ট্রাফিক কর্মকর্তারা বলছেন, গাড়ি চলাচল বেড়েছে। তবে আগের মতো জ্যাম হচ্ছে না।

রাস্তায় খুব একটা জ্যাম নেই, তবে অনেক গাড়ি আছেপ্রজাপতি পরিবহন নামে একটি বাসের চালক কালাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মানুষজন এখন ভালোই যাতায়াত করে। অফিস টাইমে যাত্রীদের ভিড় থাকে। খুব বেশি যাত্রী তো নিতে পারি না। তাই, যাত্রীদের দীর্ঘ সময় বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয়। রাস্তায় খুব একটা জ্যাম নেই, তবে অনেক গাড়ি আছে।’

অফিসগামী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘করোনার জন্য অনেক কিছুই বন্ধ ছিল, মানুষের যাতায়াত সীমিত ছিল। কিন্তু এখন আস্তে আস্তে সব অফিস-আদালত খুলে যাচ্ছে। এর ফলে সব মিলিয়ে পরিবেশ আগের মতোই হয়ে যাচ্ছে। তবে করোনা পরিস্থিতি কতটা স্বাভাবিক হবে সেটা বলা যাচ্ছে না। ঝুঁকি নিয়ে যেতে হচ্ছে অফিসে। আর বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ সময়।’

মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড কারওরান বাজার মোড়ে কর্তব্যরত তেজগাঁও জোনের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আনোয়ার কবির বলেন, ‘মানুষের মধ্যে করোনা-ভয় কেটে গেছে। রাস্তার মানুষের চলাচল বেড়েছে, গাড়ি সংখ্যাও বেড়েছে। তবে খুব বেশি জ্যাম হচ্ছে না। যেখানে আগে ৩০ মিনিট লাগতো, অফিস টাইমে সেখানে এখন ১৫ মিনিট লাগছে। সব মিলিয়ে রাস্তার ট্রাফিক সিগন্যাল আগের রূপে ফিরে যাচ্ছে।’

মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্ট মেহেদী বলেন, ‘অফিস টাইম সকাল ৯-১০টায় গাড়ির চাপ সবচেয়ে বেশি থাকে। তবে খুব বেশি জ্যাম হয় না। কিন্তু ১০-১৫ মিনিট সময় বেশি লাগে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চলাচল বেড়েছে।’

এদিকে খুলতে শুরু করেছে ফুটপাতের দোকানগুলোও। সেখানে দেখা গেছে নিম্ন আয়ের মানুষজন দিব্যি একসঙ্গে বসে চা পান করছে। আবার কেউ সকালের খাবার খাচ্ছে। তাদের ভাষ্য, ‘করোনা নাই। এই যে আমরা তো দিব্যি চলতাছি, কোনও সমস্যা হচ্ছে না।’

ছবি: হাসনাত নাঈম