অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানি বন্ধের দাবি

আগামী মাস থেকে বিআরটিএ-এর পূর্বনির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছে বেশ কয়েকটি সংগঠন। একইসঙ্গে নিরাপদ সড়কের জন্য পাঁচটি সুপারিশও জানিয়েছে তারা। মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে যৌথভাবে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এসব দাবি ও সুপারিশ জানানো হয়। এতে অংশ নেয় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), বারসিক, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, বাংলাদেশ হর্কাস ফেডারেশন ও ঢাকা যুব ফাউন্ডেশন।

সংগঠনগুলোর সুপারিশ পাঁচটি হচ্ছে— বাসগুলো যেন বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে না সেটা নিশ্চিত করা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেন যাত্রী চলাচল করতে পারে সেদিকে নজর দেওয়া, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর দ্রুত বাস্তবায়ন, যাত্রী হয়রানি বন্ধ করা এবং বাসকে প্রাধান্য দিয়ে গণপরিবহনে ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত স্থানে স্টপেজসহ আসা-যাওয়ার সুবিধাসহ একটি সমন্বিত পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি বিআরটিএ বাস মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়- আগামী ৩১ আগস্টের পর গণপরিবহনে আর বর্ধিত ভাড়া নেওয়া যাবে না। এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা থেকে আশাবাদী হতে পারছি না। বিআরটিএ কর্তৃক নির্ধারিত ঢাকা শহরে প্রতি কিলোমিটার ১ টাকা ৭০ পয়সার এবং দূরপাল্লার প্রতি কিলোমিটার সর্বোচ্চ ভাড়া ছিল ১ টাকা ৪২ পয়সা, এর অতিরিক্ত ভাড়া আদায় যাতে না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেন যাত্রী চলাচল করতে পারে, সেদিকে নজর দিতে হবে।

কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে শর্তসাপেক্ষে সীমিত পরিসরে নিদির্ষ্ট সংখ্যক যাত্রী নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার চলাচলকারী বাস ও মিনিবাসের ভাড়া পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছিল। ২০১৬ সালের মে মাসের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লায় চলাচলকারী প্রতি কিলোমিটারের সর্বোচ্চ ভাড়া ছিল ১ টাকা ৪২ পয়সা। করোনাকালীন সময়ে ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে তা ২ টাকা ২৭ পয়সা নির্ধারিত হয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে বাস ও মিনি বাসের চলাচলের ক্ষেত্রে ২০১৬ সালের প্রজ্ঞাপন অনুসারে ভাড়া ১ টাকা ৭০ পয়সা এবং চট্রগ্রামে ১ টাকা ৬০ পয়সা। করোনাকালীন বাস ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ায় তা যথাক্রমে ২ টাকা ৭২ পয়সা এবং ২ টাকা ৫৬ পয়সা হয়েছে। ভাড়া বাড়ানোর সময় ভোক্তা ও নাগরিক অধিকার সংগঠনগুলো আপত্তি করেছিল। করোনার সময়ে পৃথিবীর কোথাও গণপরিবহণে ভাড়া বাড়ানো হয়নি।

তারা আরও বলেন, গণপরিবহন করোনাকালীন ৬৬ দিন বন্ধের পর চালু হওয়াতে আবারও দেখা দিয়েছে নৈরাজ্য। ভাড়া ডাবল, উপেক্ষিত যাত্রী সুরক্ষা, ১১ দফা শর্ত ভঙ্গ করে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলছে বাস চালক, হেলপার ও যাত্রীরা। কলাবাগান থেকে প্রেসক্লাবের দুরত্ব ৫.৬ কি.মি.। এই দূরত্বে বাসভাড়া হওয়া উচিত ৭ টাকার মতো কিন্তু করোনাকালে এই ভাড়া ৩০ টাকার মতো নিচ্ছে। প্রতিবাদ করেও সুফল মিলছে না।

 

মানববন্ধনে ছিলেন পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, বানিপা'র সাধারণ সম্পাদক এম এ ওয়াহেদ, বাংলাদেশ হকার্স লীগের সভাপতি এম এ কাশেম, পবার সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল, বারসিকের সমন্বয়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঢাকা যুব ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো. শহীদুল্লাহ প্রমুখ।