ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে অন্ধকারে ভিসা সেন্টারগুলো

টিকিটের জন্য প্রবাসীদের ভিড়

ছুটিতে দেশে এসে  আটকে পড়া সৌদি প্রবাসীদের ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়নি। যদিও পররাষ্ট্র  প্রতিমন্ত্রীর ঘোষণার পর রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) প্রবাসীরা সৌদি দূতাবাসে গিয়ে হাজির হন। দূতাবাস থেকে প্রবাসীদের জানানো হয়— আবেদন করতে হবে নির্ধারিত ৩১টি ভিসা সেন্টারের মাধ্যমে। অন্যদিকে ভিসা সেন্টারগুলো বলছে,  তাদের কাছে দূতাবাসের কোনও নির্দেশনা  এখনও আসেনি। ফলে  প্রবাসীদের ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে। 

পাঁচ দিন আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘সৌদি আরবের সরকার আমাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সিধান্তগুলো নিয়েছে।  আকামার মেয়াদ আরবি সফর মাসের শেষ দিন পর্যন্ত (মানে আজ থেকে আরও ২৪ দিন) বর্ধিত করা হয়েছে।  বাংলাদেশ বিমানকে রিয়াদ এবং জেদ্দায় সপ্তাহে মোট চারটি ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ঢাকায় সৌদি আরব দূতাবাসের ভিসা অফিস রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) থেকে খোলা থাকবে, যেখানে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নতুন নিয়মাবলী মেনে কনসুলার সেবা প্রদান করা হবে।’

প্রতিমন্ত্রীর এমন ঘোষণার পর রবিবার ভোর রাত থেকেই ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের সামনে হাজির হন কয়েক হাজার প্রবাসী। ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির আশা নিয়ে আসলেও তাদের নিরাশ করে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়,  দূতাবাসের অনুমোদিত ৩১টি ভিসা সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে প্রবাসীদের ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করতে হবে। এরপর দূতাবাস থেকে প্রবাসীরা ছুটতে থাকেন  এসব ভিসা সেন্টারে। তবে সেখানে গিয়েও কোনও আশার আলো দেখতে পাননি প্রবাসীরা। ভিসা সেন্টারগুলো জানিয়েছে,  প্রবাসীদের ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে তাদেরকে আগে থেকে কোনও নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। কীভাবে কোন প্রক্রিয়ায়  আবেদন জমা নিতে হবে, তা নিয়ে তারাও রয়েছে অন্ধকারে। যদিও কোনও কোনও ভিসা সেন্টার প্রবাসীদের পাসপোর্ট জমা রেখেছে।

সোমবারও (২৮ সেপ্টেম্বর) প্রবাসীরা হন্যে হয়ে ছুটছেন ভিসা সেন্টারে। কিন্তু আজও কোনও আশার আলো নেই। ভিসা সেন্টারগুলো জানিয়েছে— তাদের কাছে এখনও  ‍দূতাবাস কোনও নির্দেশনা দেয়নি।  সৌদি দূতাবাস অনুমোদিত তানজুম কনসালটেন্সি সার্ভিসের ভিসা কনসালট্যান্ট হাবিব উল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের কাছে দূতাবাস থেকে কোনও নির্দেশনা আসেনি, কোন প্রক্রিয়ায় আবেদন জমা নিতে হবে এবং কারা আবেদন করতে পারবেন। পরিষ্কার নির্দেশনা না থাকলে প্রবাসীদের কাছ থেকে আবেদন গ্রহন করাও সম্ভব না।  আগে স্বাভাবিক নিয়মে আবেদন গ্রহণ করা, আর এখনকার পরিস্থিতি তো এক না। ফলে দূতাবাস বিষয়টি পরিষ্কার নির্দেশনা দিলেই আমরা আবেদন গ্রহণ ‍শুরু করবো।’

একই কথাই বললেন এ আই এন্টারপ্রাইজের এক্সিকিউটিভ আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, দূতাবাস থেকে মঙ্গল অথবা বুধবারের মধ্যে নির্দেশনা পেলে আবেদন গ্রহণ শুরু করতে পারবো।’

আবার কিছু কিছু ভিসা সেন্টার নির্দেশনা না পেলেও প্রবাসীদের পাসপোর্ট সংগ্রহ করছে। তবে  পরিষ্কার নির্দেশনা না পাওয়ায় চরম বিভ্রান্তিতে আছেন প্রবাসীরা।

রবিবার দূতাবাস খুলবে এমন ঘোষণায় নোয়াখারী থেকে শনিবার ঢাকায় আসেন মো. সাব্বির। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভোর রাতে এসে দূতাবাসের সামনে লাইনে দাঁড়ালাম। সকালে এসে শুনি দূতাবাসে কোনও কাজ হবে না। যেতে হবে ভিসা সেন্টারে। সেখানে রবিবার পাসপোর্ট দিয়েছিলাম। কিন্তু তারাও নাকি কিছুই জানে না। তাই আজকে পাসপোর্ট ফেরত নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।  অহেতুক টাকা খরচ করে ঢাকায় আসলাম।’