বিশ্ব ক্ষুধা সূচক (জিএইচআই) ২০২০

‘গুরুতর’ অনাহারে বাংলাদেশ

বিশ্ব খাদ্য দিবসবিশ্বের ১১টি দেশের মানুষ ‘ভীতিকর মাত্রার’ অনাহারে ভুগছে। আর ‘গুরুতর মাত্রার’ অনাহারে ভুগছে বাংলাদেশসহ ৪০টি দেশের মানুষ। শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত ‘বিশ্ব ক্ষুধা সূচক (জিএইচআই)-২০২০’-এ এমন চিত্র উঠে এসেছে। এবারের সূচকে ১০৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭৫তম। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০৩০ সাল নাগাদ ক্ষুধার মাত্রা শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসতে জাতিসংঘ যে লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে, তা পূরণে বিশ্বকে এক ‘বিশাল পর্বত’ পাড়ি দিতে হবে।

খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আয়ারল্যান্ডভিত্তিক কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ও জার্মানিভিত্তিক ‘ওয়েলথ হাঙ্গার লাইফ’ যৌথভাবে বিশ্ব ক্ষুধা সূচক প্রকাশ করে থাকে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এক্ষেত্রে তারা অপুষ্টি, খর্বাকৃতি শিশুর সংখ্যা, কৃশকায় বা শীর্ণকায় শিশু ও শিশুর মৃত্যুর হার—এ চারটি মাপকাঠি বিবেচনা করে।

বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ক্ষুধার মাত্রাকে ভাগ করা হয় সহনীয়, গুরুতর ও ভীতিকর—এই তিনটি ক্যাটাগরিতে। বিশ্ব ক্ষুধা সূচক অনুসারে ১০০ পয়েন্টের এক স্কেল রয়েছে, যেখানে শূন্য হলো সেরা স্কোর। কারও স্কোর শূন্য মানে সে দেশে কোনও মানুষ অনাহারে নেই। এ বছরের সূচকে ৭৫তম অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের স্কোর ২০.৪। বাংলাদেশ ক্ষুধার ‘গুরুতর মাত্রা’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। গত বছরের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৮৮তম।

বাংলাদেশে নিয়োজিত কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইডের সহকারী কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিনা রহমান প্যানেল আলোচনায় বলেন, ‘এ বছর কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে কিনা, সেদিকে খেয়াল রাখছি আমরা। তাছাড়া, ২০২০ সালে স্বাস্থ্যগত, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত সংকটের কারণে সৃষ্ট খাদ্য ও পুষ্টিজনিত অনিরাপত্তা আরও প্রকট হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশ।’

বর্তমান সংকট মোকাবিলা, ভবিষ্যৎ সংকট প্রতিরোধ এবং ২০৩০ সাল নাগাদ ক্ষুধাকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে সবাইকে একত্রে কাজ করার অনুরোধ জানিয়েছেন হাসিনা রহমান। এর জন্য খাদ্য ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ, স্বাস্থ্যকর ও পরিবেশবান্ধব করে গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

ক্ষুধার হার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে জাতিসংঘ ২০৩০ সালের যে লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে, তা পূরণ করার জন্য আর মাত্র ১০ বছর বাকি আছে। এমন অবস্থায় সবার জন্য পর্যাপ্ত ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে বিশ্বের দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি ও পদক্ষেপ দ্বিগুণ করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে ক্ষুধা সূচকের প্রতিবেদনে।