মধুদা’র ভাস্কর্যের কান ভাঙা!

জোড়া লাগানো হয়েছে ভাঙা কানটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মধুদার স্মৃতিরক্ষার্থে নির্মিত ভাস্কর্যের বাম কান ভাঙা পাওয়া গেছে৷ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ভাঙা অংশ জোরা লাগানোর পরিকল্পনা করেন।

কীভাবে ভাস্কর্যটির কান ভেঙে গেল, তা বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন৷ প্রক্টর অধ্যাপক ড. একে এম গোলাম রব্বানী কান ভাঙা ও জোরা লাগানোর ঘটনার নিশ্চিত করেন।

বুধবার গভীর রাতে যে সময় ভাস্কর্যটি কান ভাঙা পাওয়া যায় সেসময় সেখানে নিয়মিতই ব্যাডমিন্টন খেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী৷

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় প্রতিদিন মধুদার ভাস্কর্যের সামনে ব্যাডমিন্টন খেলেন কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা৷ সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সেখানে খেলা হয়৷ গত কাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সেখানে খেলা চলে৷

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'যে সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ব্যাডমিন্টন খেলে, সে সময়ের মধ্যে কেউ ভাস্কর্য ভাঙার সাহস পাবে না৷ এ সময়ের মধ্যে ভাঙার কথা না৷ কারণ খেলার কোর্টের আশপাশে অনেক নেতাকর্মীরা থাকে৷'

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, 'রাত ১১টার দিকে আমি অবহিত হয়েছি৷ কে বা কারা এ কাজ করেছে, তা এখন নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷ ভাস্কর্যের কানের ছোট ভাঙা অংশ রাতে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা জোড়া লাগিয়ে দিয়েছে৷ পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে, কারা ভেঙেছে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে৷ ভাস্কর্য হলো ইতিহাসের অংশ, এটি সংরক্ষণে সবার সমান ভূমিকা আশা করছি৷'

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে মধুর ক্যান্টিন পাক বাহিনীর রোষানলে পড়ে। এরই সূত্র ধরে ’৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন মধুদা, তার স্ত্রী, বড় ছেলে ও তার নববিবাহিত স্ত্রী। মধুদার স্মরণে মধুর ক্যান্টিন প্রাঙ্গণেই নির্মিত হয় শহীদ মধুদার স্মৃতি ভাস্কর্য। ভাস্কর্যটির গায়ে লেখা রয়েছে ‘আমাদের প্রিয় মধুদা’ বাক্যটি। এর ভাস্কর হলেন মো. তৌফিক হোসেন খান। ১৯৯৫ সালের ১৮ এপ্রিল তৎকালীন উপাচার্য এমাজ উদ্দীন আহমেদ ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন। তবে পরবর্তীতে এটি পুনঃনির্মাণ করা হয় এবং ২০০১ সালের ১৭ মার্চ পুনঃনির্মিত ভাস্কর্যের উদ্বোধন করেন উপাচার্য এ. কে আজাদ চৌধুরী।