ধর্ষণকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে মেয়েটিকে হাসপাতালে নেয় দিহান

রাজধানীর কলাবাগানের মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনা লুকাতে চেয়েছিল তার কথিত প্রেমিক ইফতেখার ফারদিন দিহান। এজন্যই মেয়েটি অচেতন হয়ে পড়লে সে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন বাদী কিশোরীর বাবা মো. আল আমিন।
এজাহারে মেয়েটির বাবা বলেছেন, বৃহস্পতিবার সকালে সাড়ে ৮টায় আমার স্ত্রী অফিসে এবং আমি সকাল সাড়ে ৯টায় ব্যবসার কাজে বের হয়ে যাই। পরে আমার মেয়ে বেলা সাড়ে ১১টায় তার মাকে ফোন দিয়ে বলে সে কোচিংয়ের পেপার্স আনতে বাইরে যাচ্ছে। দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে দিহান আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলে আমার মেয়ে তার বাসায় গিয়েছিল। সেখানে হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়ায় তাকে রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করিয়েছে। এ কথা শুনে আমার স্ত্রী দুপুর ১টা ৫২ মিনিটের দিকে হাসপাতালে পৌঁছায়। সেখানে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে জানতে পারেন আমাদের মেয়েকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলা হয়েছে।  
পরে আমরা বিভিন্নভাবে জানতে পারি দিহান আমার মেয়েকে প্রেমে প্রলুব্ধ করে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে তার বাসায় ডেকে নিয়ে যায়। দিহান ফাঁকা বাসায় আমার মেয়েকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের সময় তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে অচেতন হয়ে যায়। পরে ধর্ষণের ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে দিহান চালাকি করে আমার মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আমার মেয়ে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) রাতে কলাবাগান থানায় ধর্ষণ ও হত্যার করার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯-এর ২ ধারায় খুনসহ ধর্ষণ মামলা করেছেন মেয়েটির বাবা মো. আল-আমিন। 
ডিএমপির রমনা বিভাগের নিউ মার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার আবুল হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নিহত কিশোরীর বাবা আল-আমিন বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। শুধু ইফতেখার ফারদিন দিহানকেই এই মামলায় আসামি করা হয়েছে। তাকে আমরা গতকালই আটক করেছি। এখন এই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। আর বাকি তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। তাদের ডিজিটাল ডিভাইসগুলো আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছি।’
আবুল হাসান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে দিহান মেয়েটিকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলেছে বলে আমাদের কাছে স্বীকার করেছে। সুরতহাল প্রতিবেদনে মেয়েটির শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। দিহানের বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া আলামতে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। দিহানকে আমরা আজই  আদালতে তুলবো। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েক দিনের  রিমান্ড চাওয়া হবে, সেটা নিয়েই আলোচনা চলছে।’
কলাবাগান থানার উপ-পরিদর্শক এস আই জাকির হোসেন বলেন, ‘মেয়েটির মরদেহ এখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। আমিও সেখানেই রয়েছি। মরদেহ ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন-

কলাবাগানে ধর্ষণের পর হত্যা মামলার আসামি দিহান আদালতে

কলাবাগানে কিশোরী হত্যা, গ্রেফতার ৩

রাজধানীতে জন্মদিনে ডেকে কিশোরীকে নির্যাতনের পর হত্যার অভিযোগ