হেঁটে পাঁচতলায় উঠে নিতে হচ্ছে টিকা

আশরাফ হোসেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব। টিকা নিতে এসেছিলেন জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে। কিন্তু টিকা নিতে তাকে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয়েছে পাঁচতলায়। ওঠার পরই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ঘেমেও যান তিনি। হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে টিকা নিতে আসা বয়স্কদের প্রত্যেককেই এ বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে।

আশরাফ হোসেন জানালেন, ‘আসার পর নিচতলায় শুনলাম, টিকা দেওয়া হচ্ছে পাঁচতলায়। লিফট নেই। ইন্ডিকেটর রয়েছে নিচে। কিন্তু মাঝে আবার নেই। কোথায় যেতে হবে সে নির্দেশনাও নেই। অনেককে জিজ্ঞেস করে টিকা দেওয়ার জায়গাটি খুঁজে পেয়েছি।’

গত পাঁচ দিনে দেশের প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ টিকা নিয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। তবে কিছু অব্যবস্থাপনা যে রয়ে গেছে তা অস্বীকার করেননি সংশ্লিষ্টরা। কেন্দ্রে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন নিয়ে ভোগান্তি, রেজিস্ট্রেশনের পর এসএমএস না পাওয়া, এসব অভিযোগই উঠছে বেশি।

তবে করোনার টিকা নিতে বয়স্কদের পাঁচতলায় উঠতে হচ্ছে- এমন ঘটনাকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।

আশরাফ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার মতো যারা বয়স্ক, তাদের তো হৃদরোগের জটিলতা থাকতে পারে। তাই চেয়েছিলাম, এই হাসপাতালে এসেই টিকা নেব। কিন্তু এসে ধাক্কা খেলাম। হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের মতো প্রতিষ্ঠানের পাঁচতলায় উঠতে হলো লিফট ছাড়া। এটা কত বড় দায়িত্বজ্ঞানহীনতা তা বলার অপেক্ষা থাকে না।’

মোহাম্মদপুরের বাবর রোড থেকে টিকা নিতে এসেছিলেন মজিদ মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘যারা আমাদের চেয়ে বয়স্ক, তাদের জন্য এটা আরও কষ্টকর। আর পাঁচতলাতেই যদি আয়োজন করতে হয়, তবে অবশ্যই লিফট সার্ভিস থাকা উচিত ছিল। টিকাটা যাদের বেশি দরকার, তাদের কথাই ভাবা হয়নি।’

হাসপাতালে এসেছেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘আমার ৮৮ বছর বয়সী মাকে এখানে আনারই সাহস পেলাম না। তাকে নিয়ে পাঁচতলায় উঠবো কী করে!’

এ সমস্যার বিষয়ে জানতে চাইলে ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীর জামাল উদ্দিন আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আগামী কয়েকদিনের মধ্যে হয়তো এ সমস্যার সমাধান হতে পারে।’

হাসপাতালের ভেতর নির্দেশনা না থাকার বিষয়টিও দ্রুত সুরাহা হবে বলে জানান তিনি।