আমদানি কমিয়ে নিজস্ব জ্বালানির অনুসন্ধান ও ব্যবহার বাড়াতে হবে

নিজস্ব জ্বালানির অনুসন্ধান ও ব্যবহার না বাড়িয়ে জ্বালানি আমদানির বর্তমান ধারা অব্যাহত রাখলে ২০৩০ সালে আমদানি ব্যয় দাঁড়াবে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর ওই জ্বালানি বিক্রি করে কী পরিমাণ অর্থ কোথা থেকে আসবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। তাই সার্বিক বিষয় নিয়ে একটি সমীক্ষা জরুরি। শনিবার (৬ মার্চ) এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিন আয়োজিত বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের ৫০ বছর শীর্ষক এক ওয়েবিনারে বক্তারা এই অভিমত প্রকাশ করেন।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ  ড. ম. তামিম বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেও তা অনুসরণ করা যাচ্ছে না। বরং সঠিকভাবে জ্বালানি ও  বিদ্যুৎ চাহিদা প্রাক্কলন করে  ১০ বছর  সময়কালকে বিবেচনায় রেখে ৫ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা করা উচিত, যার বাস্তবায়ন প্রতি বছর পর্যালোচনা করে পরের বছরের কর্মসূচি চূড়ান্ত করা যাবে।

ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ আবদুস সালেক। তিনি বলেন, জ্বালানি খাতে বাংলাদেশ সবচেয়ে বড় দুটি সম্ভাবনা নষ্ট করেছে। প্রথমটি হচ্ছে মিয়ানমার থেকে গ্যাস রফতানির ত্রিদেশীয় পাইপলাইন না করা এবং উত্তরাঞ্চলের কয়লা ক্ষেত্র উন্নয়নে যথাসময়ে সিদ্ধান্ত নিতে না পারা। অন্যদিকে ২০০০ সালের পর থেকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে জল ও স্থলে কার্যকর কোনও সাফল্য আসেনি। ফলে দেশকে পর্যায়ক্রমে আমদানি নির্ভর হয়ে পড়তে হয়েছে। যা বঙ্গবন্ধুর জ্বালানি উন্নয়ন দর্শনের পরিপন্থী।

বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড)  এর চেয়ারপারসন আবুল কাসেম খান বলেন,  লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমদানি কমিয়ে নিজস্ব জ্বালানি সম্পদ ব্যবহারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। এটার জন্য নিজস্ব কয়লা ব্যবহারে কাজ শুরু করে এবং ব্যাপকভিত্তিক তেল গ্যাস অনুসন্ধানের কোনও বিকল্প নেই।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ব বিভাগের অনারারি  প্রফেসর ড.  বদরুল ইমাম বলেন, বাংলাদেশের ভূ-গঠনের কারণে এখানে গ্যাস সংকট থাকার কোনও কারণ নেই। বরং গোষ্ঠী স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দিতে গিয়ে জনগণের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে বলেই গ্যাস অনুসন্ধান করা যায়নি। বাপেক্স, আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি, দেশি-বিদেশি সকল উদ্যোগকে নিয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান ছাড়া আমদানি নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার কোনও উপায় নেই।