বন্ধ অ্যাপ চলছে ‘খ্যাপ’

সরকার ঘোষিত এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণার পর রাইড শেয়ারিং কোম্পানি উবার ও পাঠাও তাদের পার্সেল ডেলিভারি ছাড়া সব কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। জনপ্রিয় এ দুটি রাইড শেয়ারিং কোম্পানি তাদের সেবা বন্ধ রাখলেও থেমে নেই মোটরবাইকে যাত্রী পরিবহন। অ্যাপের পরিবর্তে এখন খ্যাপে চলছে যাত্রী পারাপার। এ নিয়ে পুলিশের কড়াকড়ি অবস্থান থাকলেও চোখ ফাঁকি দিয়েই চলছে সেবাটি।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করে বিধি-নিষেধ আরোপ করে সরকার। এতে নগরীতে সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। ফলে অফিসগামী যাত্রীরা অনেকটা বিপাকে পড়েন। এ সুযোগেই অ্যাপে পরিচালিত মোটরবাইকগুলো এখন অ্যাপের পরিবর্তে খ্যাপে (কন্ট্রাকে) যাত্রী পরিবহন করছে।

সকালে নগরীর খিলগাঁও রেলগেটের পাশে সারিবদ্ধভাবে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তাদের একজন আমির হোসেন। তিনি বলেন, রিকশায় দুজন চলতে পারে। সিএনজি চলতে পারে। তাহলে মোটরবাইক চলতে পারবে না কেন? রিকশা-সিএনজি থেকে তো মোটরবাইক আরও নিরাপদ। এখানে কেউ মুখোমুখি বসে না।

তিনি আরও বলেন, অফিস আদালত, বই মেলা সবই খোলা। দোকানপাটও কমবেশি খোলা। বন্ধ শুধু রাইড শেয়ারিং অ্যাপ। তাহলে মানুষ চলাচল করবে কীভাবে? অ্যাপ চলে না তাতে কী হয়েছে? এখন মানুষ প্রয়োজনেই আমাদেরকে খোঁজে। সে কারণে আমরা রাস্তায় এখন কন্ট্রাকে যাত্রী বহন করি।

তবে সাধারণ যাত্রীরা অভিযোগ, অ্যাপের চেয়ে খ্যাপের মাধ্যমে মোটরবাইক চালকরা কয়েকগুণ বেশি টাকা আদায় করছে। তাছাড়া গণপরিবহন বন্ধের সুযোগও তারা নিচ্ছেন। এতে বাধ্য হয়েই গন্তব্যে পৌঁছার কারণে তাদের দাবিকৃত ভাড়াই পরিশোধ করতে হচ্ছে।

বাসাবো থেকে ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন বাবাকে দেখার জন্য মোটরবাইকে উঠেছেন আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, অন্যদিন এই পথে একশ থেকে ১২০ টাকায় যেতাম। আজ রাস্তা ফাঁকা। ১৫০ টাকা দেবো বলার পরেও বাইকচালক রাজি হচ্ছে না। তিনি দাবি করছেন ১৭০ টাকা।

এদিকে সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে অবস্থানরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা মোটরবাইকে দুইজন পরিবহন হতে দেখলেই মামলা দিচ্ছেন। এমতাবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক সিগন্যালগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন মোটরবাইক চালকরা।

জানতে চাইলে পাঠাওয়ের মার্কেটিং ডিরেক্টর সৈয়দা নাদিলা মাহবুব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, পাঠাওয়ের যাত্রীবাহী বাইক সার্ভিস বন্ধ রয়েছে। তবে পাঠাও পার্সেলসহ অন্যান্য সার্ভিসগুলো চালু রয়েছে।
 
উবারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, করোনার কারণে তারা বাংলাদেশে তাদের পার্সেল ডেলিভারি সেবা উবার কানেক্ট ছাড়া সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন।