‘গ্যাস ঘাটতি মেটাতে পার্বত্য চট্টগ্রামে অনুসন্ধান শুরু করতে হবে’

পার্বত্য চট্টগ্রামের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে গ্যাস অনুসন্ধানে এখনি অনুসন্ধানের কাজ শুরু করতে হবে। বাপেক্সকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি পিএসসির মাধ্যমে অথবা যৌথভাবে কাজ করার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। এতে ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

শনিবার (৮ মে) এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিনের উদ্যোগে ‘মিসড অপরচুনিটি: হাইড্রোকার্বন এক্সপ্লোরেশন ইন চিটাগাং হিল ট্র‍্যাকস’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপেক্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মর্তুজা আহমেদ ফারুক চিশতি। বক্তব্য রাখেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বদরুল ইমাম, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ আব্দুস সালেক সুফি, ইউএমসির বাংলাদেশের অপারেশন সাবেক ভিপি ফরিদ উদ্দিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, আপস্ট্রিম ও ডাউন স্ট্রিমের সিইও জসিম উদ্দিন।

মোল্লাহ আমজাদ বলেন, বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় আমাদের গ্যাসের মজুত খুবই নগণ্য। সবচেয়ে বেশি গ্যাস পাওয়া যায় রাশিয়া, ইরান ও কাতারের কাছে। গ্যাসের প্রায় ৫০ ভাগ মজুতই তাদের কাছে। আমাদের উত্তোলনযোগ্য মজুতের পরিমাণ ১০ দশমিক ৬ টিসিএফ। আমরা উত্তোলন করেছি ১৭ দশমিক ৪ টিসিএফ। নতুন আবিষ্কার ২ টিসিএফ-এর মতো। এরপর নতুন আবিষ্কার না হলে ২০৩১ সালে গ্যাস শেষ হয়ে যাবে। কিভাবে আমাদের মজুতের পরিমাণ বাড়ানো যায় সেটা নিয়ে কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এক্ষেত্রে পাহাড়ে গ্যাস অনুসন্ধানের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ১৯১০ থেকে এখন পর্যন্ত পাহাড়ে বেশ কিছু কাজ হয়েছে। ১৭টি অনুসন্ধানের কাজ হয়েছে। এরমধ্যে একটি শুকনো অবস্থায় পাওয়া গেছে। অন্যগুলোতে কোনও না কোনও সম্ভাবনা পাওয়া গিয়েছিল।

মর্তুজা আহমেদ ফারুক বলেন, ১৯১০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১৪টি কূপ খনন করা হয়েছে। এরমধ্যে ১টি গ্যাসক্ষেত্র সেমুতাং পাওয়া গেছে। বাকীগুলো এখনও অনুসন্ধানেই যাওয়া হয়নি। বাপেক্স একা না পারলে যৌথভাবে সেখানে অনুসন্ধান শুরু করা দরকার এখনই। যে হারে গ্যাসের ব্যবহার হচ্ছে সে তুলনায় আমাদের অনুসন্ধান হচ্ছে না। ফলে ২০৩০ সালের পর জ্বালানি মেটানো কঠিন হয়ে পড়বে বলে তিনি মনে করেন।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বদরুল ইমাম বলেন, পাহাড়ের মধ্যে সমতল এলাকায় কাজ করে ত্রিপুরায় কাজ করে গ্যাস অনুসন্ধানে সফল হয়েছে। আমরাও একইভাবে চেষ্টা করতে পারি। এতে ঝুঁকিও কম হবে। বাপেক্সের সাথে ভারতের কোম্পানি ওএনজিসির যদি যৌথভাবে কাজ করতে পারে তাহলে বাপেক্স অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে।

আব্দুস সালেক সুফি বলেন, বাপেক্সকে আমরা নিয়ন্ত্রণ না করে কারিগরি একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করতে পারি। এতে বাপেক্স আরও ভালভাবে কাজ করতে পারবে বলে মনে করছি।

ফরিদ উদ্দিন বলেন, এক জরিপে দেখা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রামের সীতাপাহাড় ও পটিয়াতে ৫ টিসিএফ এর মতো গ্যাসের মজুত আছে। এটি বাপেক্সই খনন শুরু করতে পারে। আর গ্যাস ঘাটতি মেটাতে এখনই পাহাড়ে অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেওয়া দরকার।