সংসদীয় কমিটির সুপারিশের নিন্দায় আসক ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিকল্প প্রস্তাবের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। সোমবার (১৪ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো পৃথক বিবৃতিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় সংগঠন দুটি।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) বিবৃতিতে বলা হয়, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিকল্প  চায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। ওই বৈঠকে একজন সদস্য বলেছেন, সাধারণত নারীরা জানাজায় অংশ নেন না। এটা নিয়ে সমাজে অনেকে প্রশ্ন তোলেন। তাই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনার দেওয়ার ক্ষেত্রে যেখানে নারী ইউএনও আছেন, সেখানে বিকল্প একজন পুরুষ কর্মকর্তা নির্ধারণ করা প্রয়োজন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে নিয়োজিত নারীদের কাজের ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপ করার বিষয়ে কমিটির এমন অযাচিত ও অবিবেচনাপ্রসূত সুপারিশে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) চরম বিস্ময় প্রকাশ করছে। এই সুপারিশ বৈষম্যমূলক, সমতা ও ন্যায্যতার মূলনীতি, সর্বোপরি নারীর মানবাধিকার বিরোধী। এমন সুপারিশ সংবিধানের ১৯ (৩), ২৭ এবং ২৮ অনুচ্ছেদ এবং সরকারের নারীর ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এছাড়া সরকারের নারী উন্নয়ন নীতি ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-৫ (জেন্ডার সমতা) এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আসক  এই সুপারিশের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছে।

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নিন্দা

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয়ভাবে দেওয়া গার্ড অব অনারে নারী কর্মকর্তার উপস্থিতি সম্পর্কে আপত্তি জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সংসদীয় কমিটির প্রস্তাবের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। এ বিষয়ে সোমবার (১৪ জুন) সংগঠনের কেন্দ্র ও উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে একটি যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রদত্ত গার্ড অব অনারে সরকারের নারী কর্মকর্তা বা পুলিশ বাহিনীর নারী সদস্যদের উপস্থিতির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সুপারিশে আমরা হতভম্ব হয়ে গিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সংসদীয় কমিটি ধর্মের দোহাই দিয়ে কীভাবে এ ধরনের নারীবিদ্বেষী, মানবাধিকারবিরোধী, সংবিধানবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী সুপারিশ করতে পারে তা আমাদের বোধের অতীত। আমরা এই ন্যক্কারজনক প্রস্তাবের প্রতি তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানাচ্ছি। একই সঙ্গে এই ধরনের সুপারিশ প্রত্যাখ্যানের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিও বিশেষভাবে আহ্বান জানাচ্ছি।’