`কৃষি, শিল্প ও স্বাস্থ্য খাতে মানবাধিকার লংঘনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে'

মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য ও সাবেক সিনিয়র সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, কৃষি, শিল্প ও স্বাস্থ্য খাতে জড়িত শ্রমিক এবং সেবাপ্রার্থীদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত ‘বিজনেস অ্যান্ড হিউমেন রাইটস অ্যান্ড কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি’ বিষয়ক থিমেটিক কমিটির ভার্চুয়াল সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভার প্রথম পর্বে জাতিসংঘ ঘোষিত ব্যবসা ও মানবাধিকার বিষয়ক নীতি-নির্দেশনা (ইউএনজিপি’স) এর বাংলা অনুবাদের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। সভায় জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি উপস্থিত ছিলেন। বিজনেস অ্যান্ড হিউমেন রাইটস প্রোজেক্ট (বি+এইচআর এশিয়া) সম্পর্কে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। পাশাপাশি বিষয়বস্তু সংশ্লিষ্ট একটি তথ্যবহুল ধারণপত্র যৌথভাবে উপস্থাপন করেন ব্যাংককের ইউএনডিপি রিজিউনাল অফিসের বিজনেস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস স্পেশালিস্ট হারপ্রিত কৌর এবং সানজিউন চয়।

সভায় পূর্ব নির্ধারিত চারটি বিষয়বস্তুর ওপর বিস্তারিত আলোচনা হয়। সেগুলো হচ্ছে, তৈরি পোশাক শিল্প শ্রমিকদের ওপর কোভিড-১৯ অতিমারির প্রভাব, চা-শ্রমিকদের দুর্দশার জীবন, রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলের মধ্যে ছয়টি চিনিকল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত এবং বিমা কোম্পানির প্রতারণা।

থিমেটিক কমিটির এই ভার্চুয়াল সভায় পিকেএসএফ-এর চেয়ারম্যান ড. খলিকুজ্জামান আহমদ বলেন, ইউনাইটেড ন্যাশনস গাইডিং প্রিন্সিপালস অন বিজনেস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস একটি বৈশ্বিক দলিল। বাংলাদেশে পরিচালিত ব্যবসা ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে নীতিমালাটির দেশীয় পরিপ্রেক্ষিত আমাদের মাথায় রাখতে হবে।

সভায় অংশ নিয়ে টেকনো হেভেন কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ নিয়ামুল করিম বলেন, বিমা কোম্পানিগুলোর প্রতারণা দীর্ঘদিনের। বিমা কোম্পানিগুলোকে নিয়ন্ত্রণে ইন্স্যুরেন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অথোরিটির (আইডিআরএ) শক্তিশালী পদক্ষেপ প্রয়োজন। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণে সংশ্লিষ্টদের চিঠি পাঠানোরও সুপারিশ করেন তিনি।

আলোচনায় অতিমারির এ সময়ে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ বজায় রাখার বিষয়ে গুরত্বারোপ করা হয়। শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকপক্ষের করণীয় ও সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বাংলাদেশে চা বোর্ডের নিবন্ধিত ১৬৬টি চা বাগানে কাজ করেন প্রায় দেড় লাখ শ্রমিকের বেতন বৈষম্য, বাসস্থান আর শিক্ষা-চিকিৎসার দুরবস্থার বাস্তব চিত্র উদঘাটনে সমীক্ষা পরিচালনার বিষয়টিও তুলে ধরেন আলোচকরা।