উই আর স্টিল ফ্রেন্ডস: পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্পর্কে পরিকল্পনামন্ত্রী

সুনামগঞ্জের পাঁচ সংসদ সদস্যের সুপারিশে রেলমন্ত্রীকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ডিও (আধা সরকারি পত্র) দেওয়া সঙ্গত ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এলাকাভিত্তিক কিছু টানাপড়েন নিয়ে ফেসবুকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের  স্ট্যাটাসের পরিপ্রেক্ষিতে তিনিও স্ট্যাটাস দিয়েছেন বলে জানান। তাদের কোনও মতবিরোধ নেই দাবি করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মধ্যে কোনও মতভেদ নেই। উই আর স্টিল ফ্রেন্ডস (আমরা এখনও বন্ধু)। আমরা কেবিনেটে আছি। মহান সংগঠন আওয়ামী লীগে কাজ করি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা কাজ করি।’

মঙ্গলবার (২২ জুন) একনেক বৈঠক শেষে  সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘উনি (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) নিজেই স্ট্যাটাস দিয়ে ৫০ বছরের বন্ধুত্বের কথা বলেছেন। এ জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের বন্ধুত্ব ৫০ বছরের বেশিও হতে পারে। যে বিষয় নিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছে, তা তেমন কোনও বড় বিষয় নয়। এটি নয় যে আমাদের মধ্যে মতভেদ আছে। আমরা দুজনই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কাজ করি এবং সরকারের সিদ্ধান্ত আমরা শেয়ার করি। এটা সরকারের সিদ্ধান্তের কোনও বিষয় ছিল না। এটা এলাকাভিত্তিক কিছু টানাপড়েন।’

সুনামগঞ্জের এই এমপি আরও  বলেন, ‘আমার জেলার সংসদ সদস্যরা আমার কিছু বিষয়ে মানসিকভাবে খুশি নন। এটা আমরা সেটেল করবো। তার (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) কাছে বোধ হয় তারা গিয়েছিল। তিনি একটা ডিও দিয়েছেন। তার প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, আমি মনে করি, এটা সঙ্গত ছিল না। কারণ, তিনি জানতেন সুনামগঞ্জে ৬ জন এমপি আছেন। আমি যে সুনামগঞ্জের এমপি সেটা তিনি ভালোভাবেই জানতেন। যেহেতু ৫০ বছরের বন্ধুত্ব, আরও বেশি করে জানার কথা।’

তিনি বলেন, ‘আমি স্ট্যাটাসে বলেছিও, উনার (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) জায়গায় যদি অন্য কেউ হতো, সে ফোন করতো যে, কিরে ভাই তোমার এলাকার লোকজন আমার কাছে এসেছে, ব্যাপার কী। তখন আমি বলতাম। আমি অবাক হয়েছি, আমার সঙ্গে কথা না বলে বা জিজ্ঞেস না করে এটা বলা। এটা একটু সারপ্রাইজড (অবাক), বাট আই অ্যাম নট শকড।’

বিষয়টি মিটমাট হয়ে যাবে আশা প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ভয়ংকর কোনেও ক্ষতি হয় নাই। ইট ক্যান বি রিপেয়ার্ড। আমি মনে করি, এটা মিস ইনফরমেশন হয়ে গেছে। ইট উইল কাভার। আমাদের উভয়ের মধ্যে বড় কোনও মতভেদ আছে বলে আমি মনে করি না।’

প্রসঙ্গত, সুনামগঞ্জ থেকে ছাতক পর্যন্ত প্রস্তাবিত রেললাইন নিয়ে স্থানীয় এমপিদের পক্ষে সম্প্রতি রেলমন্ত্রীকে একটি ডিও লেটার দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ১৪ জুন তার ফেসবুক পেজে বিষয়টি নিয়ে একটি স্ট্যাটাসও দেন। ওই স্ট্যাটাসে তিনি পরিকল্পনামন্ত্রীর সঙ্গে তার ৫০ বছরের বেশি সময়ের বন্ধুত্ব উল্লেখ করে স্থানীয় একটি সংবাদ মাধ্যেমে তার ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর দ্বন্দ্বের কারণে নাকি সিলেটের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে বলে সংবাদের উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। কোনও বিশেষ বা অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য করা হয়েছে বলে তিনি ফেসবুকে উল্লেখ করেন। ফেসবুকে এই স্ট্যাটাসটির প্রয়োজন আছে বলে মনে করছি না, তবে একটি  পরিকল্পনামন্ত্রী ও তার স্থানীয় শুভাকাঙ্ক্ষীদের মধ্যে যাতে কোনও বিভ্রান্তির সৃষ্টি না হয়, তার জন্য স্ট্যাটাস দিয়েছেন বলে দাবি করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পরে পরিকল্পনামন্ত্রী পাল্টা ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন। সুনামগঞ্জের অন্য ৫ জন সংসদ সদস্যের অবস্থান সমর্থন করে রেলমন্ত্রীকে হুট করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডিও লিখেছেন. তা তাকে অবাক করে দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন। ৫০ বছরের বন্ধু এবং মন্ত্রিপরিষদের সহকর্মীর জন্য এটি স্বাভাবিক অবস্থায় আশা করা যায় না বলেও তিনি ফেসবুকে তুলে ধরেন।