‘হঠাৎ বিস্ফোরণ, তারপর সব অন্ধকার’

অফিসে বসে কাজ করছিলাম। ৭টা ২৫ মিনিটে হঠাৎ বিকট আওয়াজ কানে আসলো। পিছনের জানালা ভেঙে চুরমার হয়ে চারপাশে ছড়িয়ে গেল। আমরা তখনও বুঝিনি কী ঘটছে। এর পরপরই বিদ্যুৎ চলে যায়। চারপাশ অন্ধকার। কথাগুলো বলছিলেন সাংবাদিক মেনন মাহমুদ। রবিবার সন্ধ্যায় বিস্ফোরণ ঘটা মগবাজার প্লাজার পাশের ভবনটির তৃতীয় তলায় তার প্রতিষ্ঠান অপরাজেয় বাংলার কার্যালয়। করোনা পরিস্থিতিতে হোম অফিস হওয়ায় তিনজন অফিসে অবস্থান করছিলেন। এরমধ্যে লেখক ও সাংবাদিক পলাশ মাহবুবও ছিলেন।

মেনন মাহমুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ঘটনার পরপরই আমরা নিচে নামার চেষ্টা করি। তিনতলা ভবনের তৃতীয়তলাতে আমাদের অফিস। এক তলা নামতেই ধোয়া আর ধুলায় আমরা কিছুই দেখতে পারছিলাম না। নিচে নেমে আসতে গিয়ে দেখলাম নিচতলা ধ্বংসস্তুপ হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তুপের ভেতর দিয়ে হাতড়ে কোনরকম বের হয়ে এসে দেখে আমার সহকর্মী পলাশের মাথা দিয়ে রক্ত পড়ছে। আমরা দ্রুত আল বারাকা হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিই। আমার ঠিক পেছনের জানালা ভেঙে কাঁচ ছিটকে আসায় আমার মাথায় অসংখ্য কাঁচের গুড়ো।

ঠিক ৭টা ২৫ এ ঘটনা ঘটেছে বলতে পারছি কারণ এর দুই মিনিট আগে আমি আমার মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলাম। নামার মুহূর্তে আমি আমার সেলফোনটি নিতে পারলেও পলাশ নিতে পারেনি। আসলে কী ঘটছে সেটা বুঝতে না পারায় আমরা হতবিহ্বল হয়ে পড়ি। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে আমার ঠিক সামনের কম্পিউটার উল্টে পড়ে।

তিনি নেমে আসার দুর্বিষহ বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, নেমে আসতে গিয়ে এখানে সেখানে কেবল আহত মানুষ পড়ে থাকতে দেখি। নিচতলা প্রায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়ায় ভেতরে কী আছে বা ওর মধ্য দিয়ে কীভাবে বেরিয়ে আসবো সেটাই ভাবতে পারছিলাম না। বেঁচে যাওয়াটা মিরাকল মনে হচ্ছে। সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসার সময় নাকে ধোঁয়া না ধুলা ঢুকছিলো সেটাও বুঝিনি আসলে। চারপাশ অন্ধকার। এর মধ্য দিয়ে আমরা তিন সহকর্মী বেঁচে ফিরেছি।