রূপগঞ্জ ট্রাজেডি

‘আমার ভাইকে চাই, জীবিত বা মৃত’ 

‘আমার ভাই সেদিন কাজে ছিল। আগুনের পরে বের হতে পারেনি। অনেকের মতো আমিও ডিএনএ স্যাম্পল দিয়েছিলাম। কিন্তু কারও সঙ্গে মেলেনি বলছে। আমার ভাইকে চাই, জীবিত বা মৃত।’ 

কথাগুলো বলছিলেন নিখোঁজ ছোট ভাইয়ের খোঁজে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে আসা সালাউদ্দিন। 

তিনি বলেন, ঘটনার দিন থেকেই তাঁকে খুঁজছেন তিনি। নিখোঁজ সেই শ্রমিকের নাম মহিউদ্দিন (২৫)। ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার আসলামপুর গ্রামের ৪ নং ওয়ার্ডের মৃত গোলাম হোসেন মাঝির ছেলে। পাঁচ ভাই তিন বোনের মধ্যে সে ছিল ৭ম। 

তার বড় ভাই বলেন, ‘আমি রক্ত দিয়েছি কিন্তু আমাকে তারা (সিআইডি) ভাইয়ের ব্যাপারে কিছুই বলতে পারেনি। শুনেছি, পরিচয় পাওয়াদের মধ্যে আমার ভাইয়ের নাম নেই।’ তিনি বলেন, আমি কয়েক দিন আগে ঢাকায় এসেছি। কিন্তু ভাইয়ের সম্পর্কে কোনও তথ্য পাইনি। এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি ভাই কী বেঁচে আছে না মারা গেছে। আমার ভাইকে চাই, জীবিত বা মৃত।’

শামীম ও মহিউদ্দিনের মরদেহের অপেক্ষায় স্বজনরা

তিনি আরও বলেন, ‘মহিউদ্দিনের প্রতিবেশী শামীম। তারা একই জেলার বাসিন্দা। শামীমের মরদেহ আজ পাবে কিন্তু আমার ভাইয়েরটা তো পাচ্ছি না। প্রথমে চট্টগ্রামের বনফুল সেমাইয়ের কারখানায় মহিউদ্দিন ও শামীমসহ ১২ জন একসঙ্গেই কাজ করতো। সেখান থেকে তারা ১২ জনই রূপগঞ্জের হাসেম ফুডস কারখানায় যোগ দেয়। ঐ কারখানার পঞ্চম তলায় সেমাই তৈরির সেকশনে তাদের ডিউটি ছিল। সেখানে মারা যাওয়াদের মরদেহ পাওয়া গেলেও আমার ভাইকে কেন পাচ্ছি না?’ 

প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জের হাসেম ফুডস লিমিটেডে আগুনের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ৪৮ মরদেহের মধ্যে ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের মাধ্যমে ৪৫ শ্রমিকের পরিচয় পাওয়া গেছে। বাকি তিনজনের মরদেহ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাদের পরিচয়ের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা সিআইডি’র এডিশনাল এসপি জীবন কান্তি সরকার।