বাংলাদেশি দূতাবাসে শোক দিবস পালিত

যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবস এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী পালন করেছে বিদেশে  বিভিন্ন বাংলাদেশি দূতাবাসগুলো।

এ উপলক্ষে রবিবার (১৫ আগস্ট) জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত, জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বিশেষ  দোয়া ও মোনাজাত, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, আলোচনা সভা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দূতাবাসগুলো।

দিল্লি মিশন

ভারতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মাদ ইমরান রবিবার সকালে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে কার্যক্রম শুরু করেন।

বঙ্গবন্ধুর ওপর এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করবো এবং একই সঙ্গে এই শোককে শক্তিতে রূপান্তর করবো। এই মুজিববর্ষে আমরা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ গড়ার গ্রত্যয় ব্যক্ত করি।’

অনুষ্ঠানে ‘বঙ্গবন্ধু দ্য ইমমরটাল লিজেন্ড’ শীর্ষক একটি প্রকাশনা উন্মোচন করা হয়। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

বিদেশি কূটনীতিক, আমলা, যুদ্ধে অংশগ্রহনকারী ভারতীয সেনা কর্মকর্তা ও বাংলাদেশের বন্ধুরা এতে অংশগ্রহণ করেন। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর পিসি জোশি, সাংবাদিক গৌতম লাহিড়ী ও কর্নেল অশোক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

কলম্বোতে শোক দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারেক মো. আরিফুল ইসলাম কলম্বো মিশন

কলম্বোতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারেক মো. আরিফুল ইসলাম জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে রবিবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা করেন সকালে।

কোভিড মহামারির উদ্ভুত পরিস্থিতিতে লোকসমাগম এড়াতে দূতাবাসের উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধু দ্য ভিশনারি লিডার’ শীর্ষক একটি ওয়েবিনার আয়োজন করা হয়। এতে শ্রীলঙ্কার কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিক, সেদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ওয়েবিনার যুক্ত ছিলেন।  প্রধান আলোচক হিসাবে বক্তব্য দেন  বাংলাদেশে  নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার সাবেক হাইকমিশনার ইয়াসোজা গুনাসেকারা, যিনি বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ায়  শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূত হিসাবে কর্মরত আছেন।

হাইকমিশনার তার সমাপনী বক্তব্যে জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের স্থপতি হিসেবে তাঁর অবিস্মরণীয় অবদানের কথা স্মরণ  করেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব মানবতার প্রতি বঙ্গবন্ধুর সুদৃঢ় অবস্থান এবং তাঁর বিশ্বদর্শন আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক, যা তাঁকে একজন বিশ্বনেতা এবং মানবতা ও  শান্তির দূত হিসেবে বিশ্ব দরবারে স্বীকৃতি দিয়েছে।’

ইটালিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করছেন রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান রোম মিশন

ইটালিতে বঙ্গবন্ধুর শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে  রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান  তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং বাঙালির প্রতিটি ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনে তাঁর অবিস্মরণীয় ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। এ প্রসঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘রূপকল্প ২০২১’ ও ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।

আলোচনা পর্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও কমিউনিটির নেতারা এবং বিশিষ্ট সাংবাদিকরা ডিজিটাল মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেন।

ভিয়েনায় বাংলাদেশ দূতাবাসে দূতাবাসে আয়োজিত শোক দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিতভিয়েনা মিশন

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গণে এক বিশেষ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত জাতির পিতা ও ১৫ আগস্টের সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিশ্বনেতা।’ রাষ্ট্রদূত বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন, বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্র নীতি এবং বিশ্ব শান্তি স্থাপনে তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বাঙালি জাতি চিরদিনের জন্য বঙ্গবন্ধুর কাছে ঋণী। বঙ্গবন্ধু আজীবন শোষিত মানুষের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করে গেছেন। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বেই নিরস্ত্র বাঙালি পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণে অনুপ্রাণিত হয়।’

আলোচনা সভা শেষে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত দূতাবাসের নিজস্ব ভবনে আরও বর্ধিত পরিসরে সজ্জিত ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’-এর উদ্বোধন করেন।