সন্তানদের লড়াই ও মায়ের সু্স্থ হয়ে ওঠার গল্প

অসুস্থ মাকে নিয়ে দিশেহারা সন্তানরা ছুটছেন এ হাসপাতাল থেকে ও হাসপাতাল। কোথাও সিট নেই। সন্তানরা বুকে আগলে দেখেন আদরের মা নিস্তেজ হয়ে আসছেন। এরপর দ্রুত ছুটে আসেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে। ভর্তি করান মা আইজুন নেসাকে।

৭২ বছর বয়সী আইজুনের আট ছেলে তিন মেয়ে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের মৃত আব্দুল খালেকের স্ত্রী তিনি।

রবিবার কথা হয় রোগীর সঙ্গে থাকা ছেলে ছাত্তার সুমনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাবা মারা যাওয়ার পর মা-ই একমাত্র অবলম্বন। শুরুতে বেশি অসুস্থ ছিলেন না। ডাক্তার দেখিয়ে বাসাতেই চিকিৎসা চালাচ্ছিলাম। বৃহস্পতিবার থেকে হঠাৎ বমি শুরু হয়। পরে শুক্রবার মাকে নিয়ে যাই স্থানীয় এক হাসপাতালে। সেখানে কয়েকটি পরীক্ষা করিয়ে শনিবার রূপগঞ্জের ইউএস বাংলা হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে যাওয়ার পর দেখা গেছে মায়ের অক্সিজেন লেভেল কমে গেছে। ডাক্তার বললেন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে। ছুটে আসি ঢামেকের করোনা ইউনিটের জরুরি বিভাগে। সেখানে ডাক্তাররা শনিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে মাকে ভর্তি করান।

‘সন্তানের কাছে মায়ের চেয়ে বড় আর কী আছে? মাকে আমরা সবসময় অভয় দিয়েছি। বলেছি, কোনও ভয় নাই, পাশে আছি। অনেকে বলে করোনা রোগী থেকে দূরে থাকা দরকার। কিন্তু মা যেখানে কষ্ট পাচ্ছে, সেখানে আবার কীসের করোনা! তাকে চিকিৎসকের কাছে আনা, তার সেবা করা আমাদের কর্তব্য।’

হাসপাতালে এই মায়ের বেডের পাশে দেখা গেছে তিনি এখন সুস্থ আছেন। এখন অক্সিজেনও লাগছে না। সুমন বলেন, ‘দোয়া করবেন। মা এখন ভালো আছেন। এখানকার চিকিৎসকরা পরীক্ষার পর জানিয়েছেন মায়ের শরীরে লবণের পরিমাণ কমে গিয়েছিল।’

হাসপাতালে এখন আইজুন নেসার সেবায় তার কয়েকজন ছেলে-মেয়ে আছেন। সুমন বলেন, ‘চিকিৎসকরা জানিয়েছেন দু-এক দিন দেখবেন। কোনও সমস্যা না থাকলে ছাড়পত্র দেবেন।’