ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা চূড়ান্তকরণে বিলম্ব নয়

ট্রান্সফ্যাটের ক্ষতিকর প্রভাব এবং ট্রান্সফ্যাটমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে প্রক্রিয়াধীন ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা দ্রুততম সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত করার তাগিদ দিয়েছেন সাংবাদিকরা।

শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)-এর সহায়তায় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ভবনের শহীদ ডাক্তার শামসুল আলম খান মিলন সভাকক্ষে ‘ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা: অগ্রগতি ও করণীয়’ শীর্ষক সাংবাদিক  কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকরা এ তাগিদ দেন। 

অ্যাডভোকেসি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত কর্মশালায় প্রিন্ট এবং অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত ২৯ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালায় প্রজ্ঞা’র পক্ষ থেকে মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন ট্রান্সফ্যাট নির্মূল প্রকল্পের টিমলিডার হাসান শাহরিয়ার এবং প্রকল্প সমন্বয়ক মাহমুদ আল ইসলাম শিহাব।

এ সময় প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, ব্রাক ইউনিভার্সিটির অ্যাসোসিয়েট সায়েন্টিস্ট আবু আহমেদ শামীম, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ’র (বিএফএসএ) সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ, জিএইচএআই’র বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড রূহুল কুদ্দুস উপস্থিত ছিলেন।

প্রজ্ঞার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রজ্ঞা জানিয়েছে, খাদ্যে উচ্চমাত্রার শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাটের কারণে প্রতিবছর পৃথিবীতে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করেন। ডব্লিওএইচও’র প্রতিবেদন অনুযায়ী ট্রান্সফ্যাটঘটিত হৃদরোগে মৃত্যুর সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম থাকলেও ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণের খসড়া নীতিমালাটি এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি সরকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২৩ সালের মধ্যে বিশ্বের খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খল থেকে ট্রান্সফ্যাট নির্মূলের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে এবং এলক্ষ্যে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) ‘খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা, ২০২১’ প্রণয়নে কাজ করছে।

কর্মশালায় আবু আহমেদ শামীম বলেন, ডালডা বা বনস্পতি ঘি এবং তা দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার, ফাস্টফুড ও বেকারি পণ্যে ট্রান্সফ্যাট থাকে। অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, “আমাদের গবেষকদল ঢাকার ডালডা নমুনার ৯২ শতাংশে ডব্লিউএইচও সুপারিশকৃত ২% মাত্রার চেয়ে বেশি ট্রান্সফ্যাট (ট্রান্স ফ্যাটি এসিড) পেয়েছেন, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

মঞ্জুর মোর্শেদ জানিয়েছেন, খাদ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যেই খসড়া প্রবিধানমালাটি চূড়ান্ত করতে ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। আমরা আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চূড়ান্ত হবে।

রূহুল কুদ্দুস বলেন, ‘ট্রান্সফ্যাট নির্মূলের অর্থনৈতিক গুরুত্বও অনেক। আমাদের প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের রফতানি বাজার দিন দিন বাড়ছে। ট্রান্সফ্যাটমুক্ত পণ্য তৈরি করতে না পারলে আমরা আন্তর্জাতিক বাজার হারাবো এবং দেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।