ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ জীবন

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ ভারতের উপকূলের দিকে সরে গেলেও এর প্রভাবে বাংলাদেশের আকাশে জ্বলীয়বাষ্পের উপস্থিতি রয়েছে। এর সঙ্গে সূর্য সোজাসুজি, অর্থাৎ খাড়াভাবে কিরণ ছড়ানোয় বেড়েছে এই গরম। সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ ভারতের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এ কারণে চলমান ভ্যাপসা গরম আরও দুই থেকে তিন দিন থাকার সম্ভাবনা প্রকাশ করেছে আবহাওয়া অধিদফতর।

এদিকে গত সপ্তাহ থেকে বৃষ্টি কমে গিয়েছিল। গতকাল শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর)  সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি এলেও রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে তীব্র তাপ অনুভূত হচ্ছে। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে এর তীব্রতা।

আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান জানান, ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের উপকূলের দিকে যাচ্ছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের আকাশে জ্বলীয়বাষ্পের সৃষ্টি হয়েছে। এর সঙ্গে সূর্য খাড়াভাবে কিরণ ছড়ানোয় গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে। আগামী দুই থেকে তিন দিন এই আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে বলে তিনি জানান।

আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়, ঝড়ের প্রভাবে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেটের কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টি হতে পারে। 

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ময়মনসিংহে ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, চট্টগ্রামে ৩৩ দশমিক ৫,  সিলেটে ৩৫ দশমিক ৭, রংপুরে ৩৫ দশমিক ৮, রাজশাহীতে ৩৬, খুলনায় ৩৩ দশমিক ২ এবং বরিশালে ৩৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা গত সপ্তাহের তুলনায় দুই থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।

আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে।

ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রস্থলের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ৬২ কিলোমিটার,  যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপের কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই উত্তাল।

এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।পাশাপাশি গভীর সাগরে বিচরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে।