নদী ভাঙনে জমি খাসের আইন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন 

নদী ভাঙনের পর ভুক্তভোগী লোকেরা অন্যত্র চলে যান, কেউ আবার শহরে পাড়ি জমান। কিন্তু নদীতে পুনরায় যখন চর জাগে তখন তাদের জমি তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। বরং ‘আইনি প্যাঁচে’ তা খাস জমির নামে সেই জায়গা ভোগ করে সরকারি লোক বা প্রভাবশালীরা। এই আইন জনগণের কল্যাণে আসে না দাবি করে তা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। শুক্রবার (১ অক্টোবর) ‘খাস আইন বাতিল সংগ্রাম কমিটি’র ব্যানারে রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে সাবেক ছাত্র ইউনিয়নের নেতা রহিম হোসেন প্রিন্স বলেন, নদী ভাঙন ও গড়নের ফলে আইনের মারপ্যাঁচে পড়ে নিজের জমি আর নিজের থাকে না। অথচ নিজের জমি ফেরত পাওয়া এই নদী ভাঙনে লোকদের অধিকার। তাই তাদের জমি বুঝিয়ে দেওয়ার পরে বাকি জমি খাস করা হোক এবং সেই জমি গরীব মানুষকে বিলিয়ে দেওয়া হোক।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের কৃষক, শ্রমিক, প্রবাসীদের কল্যাণে এই দেশে এত উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু আজ লুটেরা ব্যবসায়ী, আমলারা তাদের নতুন নিয়ম করে তাদের জমি কেড়ে নেয়, তাদের টাকা আত্মসাৎ করে। 

মানববন্ধনে যেসব দাবি তোলা হয়
১. অবিলম্বে নদী সিকস্তি অঞ্চলে ডিএস, সিএস, এসএ, আরএস রেকর্ড এবং চিটার ভলিউম দেখে প্রজাস্বত্ব বহাল ও খাজনা-খারিজ চালু করতে হবে।
২. ‘ভূমি আইন-২০২০’-এ উল্লেখিত সিকস্তি জমিতে প্রজাস্বত্ব বলবৎ থাকার সময়সীমা ৩০ বছর তুলে দিয়ে ‘যখনই চর জেগে উঠবে তখনই চলতি কর পরিশোধ সাপেক্ষে প্রজাস্বত্ব বহাল করতে হবে’ মর্মে আইন পাস করতে হবে। 
৩. বিশেষজ্ঞ সমীক্ষা, নদীর সীমানা নির্ধারণ, ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা, পাড় ও ঢালু সঠিক রেখে নদীর ড্রেজিং করা এবং নদী খননের নামে বালু ব্যবসা বন্ধ করতে হবে।
৪. নদী ভাঙন রোধে ও জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
৫. নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।

মানববন্ধনে প্রবীণ কৃষক নেতা আব্দুল কাদের চাকলাদার, সংগ্রাম কমিটির কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কৃষক নেতা জাহিদ হোসেন খান, ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি ডা. ফজলুর রহমান, তেল-গ্যাস বিদ্যুৎ-বন্দর ও সুন্দরবন রক্ষায় জাতীয় কমিটির নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল প্রমুখ।