ঘূর্ণিঝড়ের মাঝেই যেভাবে উদ্ধার হলেন ১৩ জেলে

বঙ্গোপসাগরে ভাসতে থাকার পাঁচ দিন পর বিকল হওয়া মাছ ধরার ট্রলারসহ ১৩ জনকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে রবিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকালে তাদের উদ্ধার করা হয়। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের মাঝেই উদ্ধারকারী দল জিপিএস শনাক্তকারী যন্ত্রের সহায়তা নিয়ে তাদের উদ্ধার করে।

কোস্টগার্ড জানায়, গত ২৮ নভেম্বর বরগুনার পাথরঘাটা থেকে এমভি হাওলাদার নামে একটি ফিশিং বোট নিয়ে এসব জেলে বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে যান। কয়েক দিন মাছ ধরার পর গত ১ ডিসেম্বর ফিশিং বোটটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। কিন্তু তখন বোটটি ছিল মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরে। এ কারণে বিপদের কথা জেলেরা কউকে জানাতে পারেননি। পাঁচ দিন সাগরে ভাসার পর ৫ ডিসেম্বর দুপুরে মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় আসে বোটটি। তখন জামাল নামে একজন জেলে ৯৯৯-এ ফোন করে উদ্ধারে সহায়তা চান। কিন্তু জামাল তাদের সঠিক অবস্থান জানাতে পারেননি, শুধু জানিয়েছিলেন পাথরঘাটা থেকে পূর্বদিকে বঙ্গোপসাগরে ১৮ ঘণ্টা বোট চালিয়ে যাওয়ার পর তারা কয়েকদিন মাছ ধরে এবং পরে তাদের বোটের ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে।

কোস্টগার্ড আরও জানায়, ৯৯৯-এর কলটি কনস্টেবল নাসির রিসিভ করেছিলেন। নাসির তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি কোস্টগার্ড সদর দফতর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, ভোলা কোস্টগার্ড, বরগুনা কোস্টগার্ড ও মোংলা কোস্টগার্ডকে জানায়। পরে এসআই আল মামুন জেলেদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন।

কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়, উদ্ধারকারী দল কলারের সঙ্গে কথা বলে তাদের অবস্থান সম্পর্কে একটা ধারণা লাভ করে। সেই অনুযায়ী ৫ ডিসেম্বর দুপুর দুইটার দিকে ভাসানচর কোস্টগার্ডের একটি উদ্ধারকারী দল অভিযানে যায়। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে তখন সাগর ছিল উত্তাল, সাগরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত ছিল। তারপরও কোস্টগার্ডের উদ্ধারকারী দল জিপিএস শনাক্তকারী যন্ত্রের সহায়তা নিয়ে বঙ্গোপসাগরে ১০-১২ নটিক্যাল মাইল তল্লাশি চালিয়ে বিকালে নৌযানটিকে চিহ্নিত করতে সমর্থ হয়। অবশেষে ৫ ডিসেম্বর বিকাল ৫টায় নিঝুম দ্বীপ থেকে ১৫ কিলোমিটার পূর্ব বঙ্গোপসাগর থেকে ১৩ জন জেলেসহ বোটটি উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের রাত ১টার দিকে ভাসানচর কোস্টগার্ড স্টেশনে নিয়ে আসা হয়।

বোটের মালিককে খবর দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে বোটের মালিকের কাছে তাদের হস্তান্তর করা হবে বলেও কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়।