কর্মকর্তাদের কণ্ঠ নকল করে প্রতারণা

গণভবন ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে প্রবেশ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার কথা বলে অনেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন চন্দ্র শেখর মিস্ত্রি (৪২)। মোবাইল ফোনে নিজেকে উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিতেন এবং কর্মকর্তাদের কণ্ঠ নকল করতেন তিনি। এমন নানা ফন্দিতে প্রতারণার অভিযোগে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের নাজনীন ভাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘গত ২০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিফ কম্পট্রোলার পরিচয়ে একজন ব্যক্তি ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের অধ্যক্ষকে ফোন করেন এবং এক ছাত্রকে ভর্তির জন্য চাপ দেন। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এ মামলা তদন্ত করতে গিয়ে চন্দ্র শেখর নামে এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করে পুলিশ। পরে তাকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে তার প্রতারণার বিভিন্ন ফন্দি।’

গ্রেফতার চন্দ্র শেখর মিস্ত্রিকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন। মোবাইল ফোনে নিজেকে উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিতেন। যেসব ব্যক্তির পরিচয়ে ফোন দেওয়া হতো, তাদের কণ্ঠ নকল করে তাদের মতো করে কথা বলতেন তিনি।

প্রতারণার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে পুলিশ জানায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিফ কম্পট্রোলার, প্রধানমন্ত্রীর এপিএস, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিএস, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পিএস, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয়ে সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে নিয়োগ, বদলি, স্কুল কলেজে ভর্তির জন্য চাপ দিতেন তিনি। এছাড়া, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানো, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে প্রবেশ পাস এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলে শতাধিক মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। কী পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এ বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।