চিংগরিয়া খালের বন্দোবস্ত বাতিল ও দখলদারিত্ব মুক্ত করার দাবি

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার চিংগরিয়া খালটির বন্দোবস্ত বাতিল, বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ বন্ধ এবং বসতবাড়ি উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। মঙ্গলবার (১ মার্চ) বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিলের দেওয়া এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমানে চিংগরিয়া খালে বন্দোবস্ত দেওয়া, বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ এবং বসতবাড়ি নির্মাণের কারণে খালের পাশে বসবাসকারী ও খালের ওপর নির্ভরশীল মানুষ প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহারের পানি পাচ্ছে না। চিংগরিয়া খাল এক সময়ে কলাপাড়া উপজেলার চাষাবাদ, অর্থনৈতিক ও মালামাল পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতো। তখন খালের পানি ছিল পরিষ্কার। নৌকায় করে উপজেলার লোকজন এই খাল ধরে যাতায়াত করতো। সরকারের বন্দোবস্তের কারণে খালের মধ্যে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে মৎস্য চাষ, বসতবাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনা তৈরি এবং ব্রিজ নির্মাণ না করে ওপর দিয়ে পাকা সড়ক নির্মাণ করার কারণে দিনে দিনে খালটি বিলীন হতে চলেছে। এক সময় খালটির প্রস্থ ৫০-৬০ ফুট হলেও খালের পাশে রাস্তা নির্মাণ ও দখলদারিত্বের কারণে সেটিকে একেবারে সংকুচিত হয়ে গেছে। উপরোক্ত কারণে মৃতপ্রায় চিংগরিয়া খালে অবাধ পানিপ্রবাহ মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ফলে খালের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করা কৃষকের অবস্থা করুণ হয়ে গেছে। কৃষি উৎপাদনে এবং আন্ধারমানিক নদীর বাস্তুতন্ত্রে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। পৌরসভার নর্দমার সংযোগ এই খালের সঙ্গে থাকায় খালটির পানি মারাত্নকভাবে দূষিত হচ্ছে।

বাপা জানায়, সময়মতো খনন না হওয়া, পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা পড়া এবং সরকার কর্তৃক বন্দোবস্তের প্রতিকার চেয়ে খালপাড়ের সাধারণ জনতা, কৃষক ও সচেতন সমাজ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বরাবর লিখিত আবেদন করেন। তবে আজ পর্যন্ত খালটিকে বাঁচাতে ও দখলদারদের থামাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ কারণে বাপা পক্ষ থেকে স্থানীয় জনগণ এবং সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে খালটির স্থায়ী বন্দোবস্ত প্রক্রিয়া বাতিল, বাঁধ অপসারণ ও অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে খালটি উন্মুক্ত করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে।

প্রসঙ্গত, পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় যেসব গুরুত্বপূর্ণ খাল রয়েছে তার মধ্যে চিংগরিয়া খাল অন্যতম। কলাপাড়ার খেপুপাড়া মৌজার আন্ধারমানিক নদী থেকে উৎপন্ন হয়ে কলাপাড়া পৌরসভার ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬ ও ৭নং ওয়ার্ডের অংশবিশেষের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে খালটি প্রায় তিন কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে একই মৌজার চাকামইয়া-নিশানবাড়িয়া নদীতে মিশেছে। অঞ্চলভেদে একই খালের বিভিন্ন নামকরণ হয়েছে। কলাপাড়া পৌরসভার খেপুপাড়া মৌজার অংশের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত খালের নাম চিংগরিয়া খাল।