জোড়া খুন করে ভারতে পালাতে চেয়েছিল আকাশ

রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু (৫০) ও কলেজ শিক্ষার্থী সামিয়া আফনান প্রীতি (২২) হত্যায় অভিযুক্ত মাসুম মোহাম্মদ আকাশকে (৩৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, হত্যাকাণ্ডের পর ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল আকাশ। তবে পুলিশি তৎপরতায় সে পালাতে পারেনি, তাকে বগুড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়।

রবিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, এই মাসুম মোহাম্মদ আকাশই সেদিন শাহজাহানপুরে যানজটে আটকে থাকা টিপুকে গুলি করে। ঘটনার আগেরদিনও সে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও অস্ত্র নিয়ে টিপুর অফিসের সামনে অবস্থান নিয়েছিল। সেদিন সে তাকে হত্যা করতে পারেনি। পরেরদিন আবার তাকে অনুসরণ করে তাকে গুলি করে। এসময় তার সঙ্গে আরেকজন ছিল। তার নাম জানতে পারলেও তদন্তের স্বার্থে প্রেস ব্রিফিংয়ে তা বলা হয়নি।

অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতার টিপু একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তাকে হত্যার পর স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। হত্যার পরদিন খুনিকে একটি গ্রুপ দেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা জয়পুরহাহাটে পৌঁছে দেয়। তারা ঢাকায় চলে আসে।
পুলিশ এই গ্রুপটিকে আটক করে হেফাজতে নেয়। 

এরপর শ্যুটার আকাশ জয়পুরহাট দিয়ে সীমান্ত পার হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে উল্লেখ করে এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘কিন্তু সৌভাগ্যবশত সে সীমান্ত পারি দিয়ে যেতে পারেনি। এরপর সে বগুড়ায় চলে যায়। বগুড়া থেকে তার ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করতো। তবে গোয়েন্দা তথ্য, প্রযুক্তির সহায়তায় ও বগুড়া পুলিশের সহযোগিতায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেফতার আকাশের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উপজেলার কাইশকানি এলাকায়। তার বাবা মোবারক হোসেন একজন স্কুল শিক্ষক।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাতে শাহজাহানপুর রেলগেটের পাশে জ্যামে আটকে থাকা প্রাইভেটকারে মতিঝিল আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি করে এক দুর্বৃত্ত। এতে টিপু ও তার গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় পাশে রিকশায় বসে থাকা বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সামিয়া আফনান প্রীতির গায়েও গুলি লাগে। পরবর্তী সময়ে তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা টিপু ও প্রীতিকে মৃত ঘোষণা করেন। গাড়িচালক মুন্না চিকিৎসাধীন।

পরে শাজাহানপুর থানায় জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০, ১১, ১২ নম্বর ওয়ার্ড নারী কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি হত্যা মামলা দায়ের করেন।