বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে পারে ইইউ-যুক্তরাষ্ট্র

ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) এবং যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে পারে। ইইউ এবং ওয়াশিংটনের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের উপাদানের মধ্যে সামঞ্জস্য রয়েছে উল্লেখ করে ইউ-এর ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক বিশেষ দূত গ্যাব্রিয়েলে ভিসেনটিন বলেছেন, ‘একারণে উভয়পক্ষই এখানে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে চায়।’

শুক্রবার (১ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবে ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা সবাইকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে পাঁচটি উপাদান রয়েছে এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রয়েছে সাতটি। এরমধ্যে যথেষ্ট সামঞ্জস্য রয়েছে এবং উভয়পক্ষের অগ্রাধিকার প্রায় সমান।’

বর্তমান স্বাধীন ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক যেন বজায় থাকে ইইউ সেটি চায় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি গতকাল (বৃহস্পতিবার) যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা করেছি। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ এর অগ্রাধিকার এবং বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করার বিষয়ে একই ধরনের চিন্তা করছে, এটি হতে পারে যে— আমরা ওয়াশিংটন এবং ইইউ বাংলাদেশের বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে পারি।’

ইইউ-এর সাতটি উপাদানের সবগুলো না নিয়ে একটি বা একাধিক নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবগুলো উপাদান নিয়ে কাজ করতে হবে এমন কোনও কথা নেই। একটি বা একাধিক উপাদান নিয়েও সহযোগিতা সম্ভব। তবে বাংলাদেশ সবগুলো নিয়েই কাজ করছে।’

ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের বড়ধরনের পরিবর্তন হয়েছে এবং দ্বন্দ্বপূর্ণ সম্পর্কের বদলে তারা এখন সহযোগিতার বিষয়ে আলোকপাত করছে এবং ইইউ এর সঙ্গে উচ্চপর্যায়ে সহযোগিতার জন্য আলোচনা চলছে।

চীনের সঙ্গে সম্পর্ক

ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল চীনের বিরুদ্ধে একটি উদ্যোগ বলে মনে করে বেইজিং। কিন্তু এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতির সঙ্গে এই অঞ্চলে একসঙ্গে কাজ করতে চায় ইইউ। এ বিষয়ে ভিসেনটিন বলেন, ‘আমরা চীনের অন্তর্ভুক্তি চাই। আমরা সবদেশের সহযোগিতা চাই এবং কোনোধরনের দ্বন্দ্বপূর্ণ সম্পর্ক চাই না।’

‘চীনের সঙ্গে ইইউ-র সম্পর্ক জটিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একইসঙ্গে তারা আমাদের অংশীদার, প্রতিযোগী এবং প্রতিদ্বন্দ্বী। জলবায়ু ক্ষেত্রে বেইজিং আমাদের সহায়তা করছে এবং পরিবেশ উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করবে বলেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আবার বাণিজ্যের ক্ষেত্রে তারা আমাদের প্রতিযোগী এবং আমরা এটিতে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু মানবাধিকার বা আন্তর্জাতিক আইন না মানার বিষয়ে তারা আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী।

‘কানেক্টিভিটি’

সাতটি উপাদানের মধ্যে কানেক্টিভিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ইইউ সবার সঙ্গে যুক্ত হতে চায়। ভিসেনটিন বলেন, ‘আমরা এশিয়ায় আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে চাই। এরমধ্যে রয়েছে মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ডিজিটাল চ্যালেঞ্জ।

ইইউ-কে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইইউ-এর মোট বিনিয়োগ হচ্ছে ১১ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ইউরো। এর বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ হচ্ছে ৬ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ইউরো, চীনের ১ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ইউরো এবং জাপানের ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ইউরো।

গত ডিসেম্বরে ‘গ্লোবাল গেটওয়ে’ নামক একটি উদ্যোগ ঘোষণা করেছে ইইউ এবং এর অধীনে ৩০০ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করতে ইউরোপের ওই জোট বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, এখানে সরকারি ও বেসরকারি খাত বা আন্তর্জাতিক ঋণদানকারী সংস্থা টেকসই প্রকল্পে অনুদান বা ঋণ দিতে পারবে।