নদী রক্ষায় কার্যকর নদী কমিশন প্রয়োজন

দেশের নদী রক্ষায় কার্যকর একটি স্বাধীন নদী কমিশন প্রয়োজন বলে মনে করেন নদী বিশেষজ্ঞরা।

বুধবার (২০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘আদালতের রায় মেনে নদী দূষণ রোধে শক্তিশালী নদী কমিশনের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক এক নাগরিক সংলাপে বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেন।

সংলাপ অনুষ্ঠানে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, ‘সুপ্রিমকোর্টের রায় অনুযায়ী প্রস্তুতকৃত অধিকতর শক্তিশালী নদী কমিশন আইনের খসড়াটি প্রশংসনীয়। তবে যেকোনও আইনি কাঠামো বাস্তবায়ন নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর। আর যেকোনও প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা তার নেতৃত্বের ওপর নির্ভরশীল। কাজেই নদী রক্ষায় যোগ্য নেতৃত্ব এবং কার্যকর একটি স্বাধীন নদী কমিশন অত্যন্ত প্রয়োজন।’

পানি ও নদী দূষণের ওপর আদালতের নির্দেশনা, নীতি ও আইন বিশ্লেষণপূর্বক মূল বক্তব্য উপস্থাপন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মাদ গোলাম সারোয়ার বলেন, ‘২০০৯ সালের হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ২০১৩ সালে নদী রক্ষা কমিশন গঠিত হয়। গত কয়েক বছরে নদী রক্ষায় যে বিষয়গুলো এসেছে, তা জনস্বার্থে করা রিট থেকে এসেছে। নদী রক্ষা কমিশনের পর্যাপ্ত জনবল নেই, যা নদী রক্ষায় কাজ করবে। প্রয়োজন সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ। নদী রক্ষার জন্য আদালত সমন্বয়হীনতাকে খুবই গুরুত্ব দিয়েছে। নদী রক্ষার সঙ্গে জড়িত সরকারী সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আন্তরিক হতে হবে। ঢাকার নদী, পানি, বায়ুর স্ট্যান্ডার্ড মান অনুযায়ী আমরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে বসবাস করি।’

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘নদীকে ভালোবাসা মানে মাকে ভালোবাসা। নদীর প্রবাহ ধরে রাখতে নদীর জমি ছেড়ে দিতে হবে এবং তা জনগণের সম্পত্তি ঘোষণা করতে হবে।’

কেন বাংলাদেশের নদীগুলোর দুরবস্থা নিয়ে সংসদ একদিন আলোচনা করতে পারে না, সেই প্রশ্ন তুলে তিনি নদী কমিশন আইনের খসড়া দীর্ঘ সময় কোনও অগ্রগতি ছাড়াই পড়ে থাকায় বিস্ময় প্রকাশ করেন।

রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘নদী রক্ষা কমিশনের কার্যকারিতা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে এর পরিচালনায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের ওপর বেশি নির্ভর করে। নদী রক্ষা কমিশনকে যতই ক্ষমতা দেওয়া হোক না কেন, বাস্তবায়নে তা কতটা কার্যকর সেটাই দেখার বিষয়।’

ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিলের সভাপতিত্বে নাগরিক সংলাপে উপস্থিত ছিলেন— জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ মনির হোসেন চৌধুরী, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশের সভাপতি এমএস সিদ্দিকী, ঢাকা ওয়াসার ঢাকা ল্যাবরেটরির পরিচালক ড. আলমগীর হোসেনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের পরিবেশ সাংবাদিক ও স্থানীয় কমিউনিটি ভিত্তিক সংগঠনের নেতারা।