দেশে এই ভ্যাপসা গরমের কারণ কী

কয়েক দিন ধরেই দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরম। কোথাও কোথাও হালকা বৃষ্টি বা কালবৈশাখী বয়ে গেলেও অসহনীয় গরম কিছুতেই কমছে না। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল খুলনায় ৩৭ দশমিক ২, তার আগের দিন অর্থাৎ বুধবারও (১৮ মে) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল খুলনায় ৩৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা খুব বেশি না হলেও অনুভব হচ্ছে প্রায় ৪০ ডিগ্রির মতো।

আজ বৃহস্পতিবার (১৯ মে) দেশের মাদারীপুর, টাঙ্গাইল, চাঁদপুর, রাজশাহী, খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর ও বাগেরহাট জেলাগুলো উপর দিয়ে মৃদু তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় তাপমাত্রা কম থাকলেও গরম অনুভূত হচ্ছে বেশি। আরও ১৫ বা ২০ দিনের মতো এই ভ্যাপসা গরম থাকতে পারে। যদিও মাঝে কালবৈশাখী বা হালকা বৃষ্টি হবে কোথাও কোথাও।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, তিন কারণে এইরকম গরম অনুভূত হচ্ছে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি, বাতাসের গতিবেগ কম, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য কম থাকা এবং দীর্ঘ সময় ধরে সূর্যের আলো মাটিতে পড়ার কারণে গরম যতটা না তারচেয়ে বেশি অনুভূত হচ্ছে।

এই সময় এমন গরম পড়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাতাসে প্রচুর জলীয় বাষ্প থাকে এই সময়ে। এই জলীয় বাষ্পের কারণে শরীরে প্রচুর ঘাম হয়। ঘাম সহজে শুকায় না। আর এই ঘামের কারণে একটু গরম পড়লে মনে হয় গরমটা অনেক বেশি। এছাড়া এখন বছরে অন্য সময়ের চেয়ে দিন বড়। ফলে দীর্ঘ সময় সূর্যের তাপ মাটিতে পড়াটাও একটি কারণ। 

হাফিজুর রহমান বলেন,  এই গরম থাকবে বর্ষা আসার আগে পর্যন্ত। আর বর্ষা মৌসুম শুরু হয় জুনের প্রথম সপ্তাহের দিকে। এরপর হয়তো গরম কমে যাবে।

এদিকে আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার মধ্যকার পার্থক্য না থাকাটাও গরমের একটি বড় কারণ। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫ দশমিক ৭ আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পার্থক্য মাত্র ৭ ডিগ্রির। সাধারণত তাপমাত্রার পার্থক্য ১০ ডিগ্রির কম থাকলে এরকম গরম অনুভব করার কথা।

আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়, রংপুর, রাজশাহীর কিছু জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কাছে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার সাথে বিজলি চমকানোসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের উত্তরপূর্বাংশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরণের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। তাপমাত্রার বিষয়ে বলা হয়,  সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তাপ প্রবাহের বিষয়ে বলা হয়, মাদারীপুর, টাঙ্গাইল, চাঁদপুর, রাজশাহী, খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর ও বাগেরহাট জেলাগুলোর উপর দিয়ে মৃদু তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।