স্থানীয়ভাবে সমাধান না পাওয়ার অভিযোগ

বিষের বোতল নিয়ে ইসিতে প্রার্থীরা

সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে নোয়াখালীর হাতিয়ার দুই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান, সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ৩৫ প্রার্থী বিষের বোতল ও কাফনের কাপড় নিয়ে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনের সামনে অবস্থান করছেন। স্থানীয়ভাবে সমাধান না পেয়ে তারা ইসিতে এ কর্মসূচি পালন করছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

স্থানীয় সংসদ সদস্যের স্বামীর অত্যাচারে তারা ভোটের প্রচার করতে পারছেন না বলে তাদের অভিযোগ। তারা বলছেন, প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও তারা কোনও প্রতিকার পাননি। তাই সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ দাবি করে সিইসির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন।

মঙ্গলবার (৩১ মে) বেলা ১১টার কিছু পরে ইসি ভবনের সামনে অবস্থান নেন তারা। প্রার্থীদের অভিযোগ, আগামী ১৫ জুন ভোটের আগে হাতিয়ার নব গঠিত ১ নং হরনী ও ২ নং চানন্দি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের ওপর হামলা, প্রচার প্রচারনায় বাধা দেওয়া হয়েছে। 

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. মুসফিকুর রহমান বলেন, আমরা মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় হামলার শিকার হয়েছি। আমরা তখন অনেকেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারিনি। তারপর সিইসি ও সচিবকে জানানোর পর তিনি আমাদের পাশের উপজেলা সুবর্ণচরে মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন।  সেখানে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর প্রচারণার নামলেই আমাদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। 

তিনি বলেন, সাধারণ জনগণ প্রাণনাশের মতো ভয়ভীতির হুমকির মধ্যে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। ইউনিয়ন দুটির পাশে মেঘনা নদী, রামগতি ও সুবর্ণচর উপজেলা সীমানা থাকাই সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়ে গেছে।  ১ নং হরনী ইউনিয়ন ও ২ নং চানন্দি ইউনিয়নে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে প্রত্যেকটি কেন্দ্রে প্রশাসনিক তৎপরতা জোরদার করা আবশ্যক। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে হাতিয়া উপজেলা বর্হিভূত প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পুলিং অফিসার এবং প্রশাসনিক ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জনবল নিয়োগ করা আবশ্যক। অন্যথায় নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রচারনা কাজ চালাতে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতেও হামলার শিকার হচ্ছি। এতে পুলিশ, সাংবাদিকও আহত হয়েছেন।

তার অভিযোগ নোয়াখালী-৬ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আয়শা ফেরদৌসের স্বামী সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে প্রার্থীদের ওপর হামলা ও প্রার্থীদের প্রচরনার কাজ বন্ধ করে দেন। বর্তমানে প্রার্থীদের সব কাজ বন্ধ রয়েছে। ইতোপূর্বে হাতিয়া উপজেলার মূল ভূখণ্ডের সব ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম পরিলক্ষিত হওয়ার কারণে ভোটাররা আতঙ্কিত। তাই প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেট, নির্বাচনে র‌্যাব, বিজিবি, কোস্টকার্ড নিয়োগ করা প্রয়োজন।

সুষ্ঠ নির্বাচনের লক্ষ্যে ওই এলাকায় ওসি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সার্কেল এএসপি প্রত্যাহার ও প্রচার করার পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া ঘোষণা দেন।

১ নং হরনী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী সালাহউদ্দিন বলেন, এমপির স্বামীর সমর্থিত প্রার্থী ছাড়া কাউকে নির্বাচন করতে দেওয়া হচ্ছে না। তারা ভোটারদের বলছেন, ইভিএমে ভোট হলেও তোমরা শুধু ফিঙ্গার দেবে। আর আমাদের লোকেরা ভোট দিয়ে দেবে। তোমরা ভোট দিতে পারবা না। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। ভোটাররা যাতে ভোট দিতে পারে কমিশনের কাছে সেই দাবি জানাই। 

তারা বলেন, আমরা এখানে দুই জন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী, ২৭ জন সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী ও ৬ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী উপস্থিত রয়েছি।

আগামী ১৫ জুন এই দুই ইউপিতে ভোট হবে।