চন্দনাইশ পৌর নির্বাচনে সহিংসতা

ভোটে জিততে ২ ক্যাটাগরিতে সন্ত্রাসী ভাড়া করেছিলেন প্রার্থী

গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোটের দিন দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় মো. হাবিবুর ইসলাম (২০) নামে এক তরুণ মারা যান। এ ঘটনায় গ্রেফতার আসামিরা আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা বলেছেন, মূলত ভোট কেন্দ্র দখল করে ফলাফল নিজের পক্ষে নেওয়ার উদ্দেশ্যেই তাদের ভাড়া করেছিলেন এক প্রার্থী। 

সোমবার (১৩ জুন) পিবিআই সদর দফতরে সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্তের শেষ পর্যায়ে এসে এমন তথ্য পেয়েছে তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই।

গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি চন্দনাইশ পৌরসভা নির্বাচনে গাছবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে দুপুরে দুই কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুর রহিম ও মো. সেলিমের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে গোলাগুলিও হয়। কেন্দ্রের পাশে ছিলেন গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র হাবিবুর ইসলাম। গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় তার মা ছকিনা খাতুন বাদী হয়ে মামলা করেন চন্দনাইশ থানায়। আদালতের নির্দেশে মামলাটি পিবিআইতে আসে।

পিবিআই বলছে, ভোটের আগের রাতে গ্রেফতার আসামিরা চন্দনাইশ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও নির্বাচনের প্রার্থী রহিম উদ্দিনের বাসাতেই ছিল। রহিম এই ভাড়াটে লোকদের অস্ত্রসহ তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে এবং অস্ত্র ছাড়া ১০ হাজার টাকা করে দেন। সেদিন তারা ৪০ জন গিয়েছিলেন। রহিমের চাচাতো ভাই মোরশেদ চক্রটির সঙ্গে তার পরিচয় করিয়ে দেন। মূলত ভোট কেন্দ্র দখল করে ফলাফল নিজের পক্ষে নিতেই এই সন্ত্রাসীদের ভাড়া করা হয়েছিল। 

পিবিআই সদর দফতরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ জানান, মামলাটি পিবিআই তদন্তের দায়িত্ব পায়। পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার এসআই শফিউল আলম মামলাটি তদন্ত ‍শুরু করেন। গত ১১ জুন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে আসামি- মো. আব্দুর রহিম (৩৪) ও মো. মোরশেদুল আলমকে (৪০) চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ থানার গাছবাড়ীয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন তিনি। 

এর আগে গত ৮ জুন মো. শাখাওয়াত ওরফে শওকত (৩৮), কামরুল আজাদ সুমন (৩২) ও মো. আজাহার উদ্দিন (২৯) নামে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে কামরুল আজাদ সুমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন বলে গত ৯ জুন আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দি দেয়। আর অপর আসামি মো. শাখাওয়াত গত ১১ জুন এবং আজাহার উদ্দিন (২৯) গত ১২ জুন স্বীকারোক্তি দেয়।

তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে আরও দুজনের নাম আসে, তারা হলো, মো. আব্দুর রহিম (৩৪) ও মোরশেদুল আলম (৪০)। তাদেরও গত ১১ জুন গ্রেফতার করে পিবিআই।