‘বাজেটে প্রতিবন্ধিতা খাতে বরাদ্দ চাহিদার তুলনায় কম’

অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আলবার্ট মোল্লা বলেছেন, প্রতিবন্ধিতা খাতে মোট বরাদ্দ ২ হাজার ৮৬৪.৮৫ কোটি টাকা, যা সামাজিক নিরাপত্তা খাতের মাত্র ২.৫২ শতাংশ, যা মোট বাজেটের ০.৪২ শতাংশ। এ বরাদ্দ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাহিদার তুলনায় খুবই অপ্রতুল।

সোমবার (১৩ জুন) ‘জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩: প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অবস্থান’ শীর্ষক বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়া তিনি এ কথা বলেন।

আলবার্ট মোল্লা বলেন, ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দক্ষতা উন্নয়ন ও আত্ম-কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কোনও উদ্যোগ বাজেটে নেই। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বাজেট বরাদ্দ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কেন্দ্রিক, অথচ অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ধারণায় মন্ত্রণালয়ভিত্তিক বাজেট বরাদ্দ প্রয়োজন ছিল। এছাড়া বাজেটে প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদ, জাতীয় আইন, নীতিমালা, কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রতিফলন নেই।’

জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাজেট প্রতিক্রিয়াটি যৌথভাবে অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন, ডিজঅ্যাবিলিটি রাইটস ফান্ড, ডিসিএফ, এনসিডিডাব্লিউ, সীতাকুণ্ড ফেডারেশন, টার্নিং পয়েন্ট, ডাব্লিউডিডিএফ, বি-স্ক্যান, ভিপস, এনজিডিও, এসডিএসএল, নোয়াক, জয়িতা নারী প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থা, বিপিইউএস, ন্যাডপো, জয়ের পথে প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থা, নরসিংদী ডিপিওডি, স্পন্দন প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থা, প্রতীক মহিলা ও শিশু সংস্থা, ডিডাব্লিউএস, পরশ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থা ও রংধনু জিলা প্রতিবন্ধী অধিকার সংস্থা এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিবন্ধী নারীদের জাতীয় পরিষদের সভাপতি নাসরিন জাহান এতে স্বাগত বক্তব্য দেন। ডাব্লিউডিডিএফ এর নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন নাহার মিষ্টির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আলবার্ট মোল্লা বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বরাদ্দের ওপর বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেন।

আলবার্ট মোল্লা ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাসিক ভাতা ১০০ টাকা বৃদ্ধি করে ৮৫০ টাকা, উপকারভোগীর সংখ্যা ৩ লাখ ৫৭ হাজার বৃদ্ধি এবং এ খাতে বরাদ্দ ৬০৯.১৮ কোটি টাকা বৃদ্ধি করায় প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এবং সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্রীড়া কমপ্লেক্সের  জন্য ১২০ কোটি টাকা এবং কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট কার্যক্রমের জন্য ৪০ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। যদি কোনও প্রতিষ্ঠান তার মোট কর্মচারীর ১০ শতাংশ বা ২৫ জনের অধিক প্রতিবন্ধী বা তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়, তবে ওই কর্মচারীদের পরিশোধিত বেতনের ৭৫ শতাংশ বা প্রদেয় করের ৫ শতাংশ যেটি কম, তা নিয়োগকারীকে কর রেয়াত দেওয়া হবে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পড়ার উপকরণ ব্রেইল মুদ্রণের ওপর ভ্যাট অব্যাহতির প্রস্তাব করা হয়েছে। শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কানে শোনার যন্ত্রে ব্যবহৃত ব্যাটারির  ওপর শুল্ক কর ২৫ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিশেষায়িত হুইলচেয়ার আমদানিতে ভ্যাট ১৫% এবং এআইটি ৫% ছিল তা সম্পূর্ণ বিলোপ করা হয়েছে। এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান।