এইডস ঠেকাতে যে ব্যবস্থা নিচ্ছে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. জিললুর রহমান বলেছেন, স্পা সেন্টারগুলো এইডস ছড়ানোর অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করে বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে। স্পা সেন্টারের নামে যৌন পেশা বা অবৈধ কার্যক্রম কোনোভাবেই আমরা বরদাশত করবো না। এ লক্ষ্যে প্রতিটি স্পা সেন্টারে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে এইচআইভি পরীক্ষা করিয়ে নিয়োগ দিতে হবে।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের কনফারেন্স রুমে ‘পর্যটন নগরী কক্সবাজারের স্পা সেন্টারে কর্মরত সদস্যদের সঙ্গে এইডস সচেতনতা’ শীর্ষক একটি কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

পুলিশ সুপার মো. জিললুর রহমান বলেন, সম্প্রতি বেশ কিছু পত্রিকায় এসেছে কক্সবাজারে ৭১০ জন এইচআইভি রোগী শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে রোহিঙ্গা রয়েছে ৬১২ জন। এটা পর্যটনের জন্য হুমকি। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে বিনামূল্যে এইচআইভি পরীক্ষা করা যায়। প্রত্যেক স্পা কর্মীর বায়োডাটা ও মেডিক্যাল রিপোর্ট ট্যুরিস্ট পুলিশের কাছে জমা দিতে হবে। নাগরিকত্ব যাচাই-বাছাই করে নিয়োগ দিতে হবে। প্রতি ৩ মাস পরপর এইচআইভি পরীক্ষা করাতে হবে। প্রত্যেক স্পা সেন্টারের ফ্রন্ট ডেস্কে এইচআইভি রোগ সম্পর্কে লিফলেট/ফেস্টুন রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ট্যুরিজম বিকাশের জন্য সবাইকে সচেতন হয়ে নিজ ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। আগামী ১০ তারিখের মধ্যে সব স্পা সেন্টারের কর্মীদের বিস্তারিত তথ্য ট্যুরিস্ট পুলিশ অফিসে জমা দিতে হবে। ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়ন নিয়মিত তদারকি করবে। যেকোনও অনিয়ম দেখলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি একটি শিল্প, এটাকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে আপনাদের সবাইকে সততার সঙ্গে প্রকৃত স্পা যাকে বলে সেটা দিতে হবে। আইনি কাঠামোর মধ্যে আনতে আমরা সহায়তা করবো। তাছাড়া স্পা সেন্টার সঠিকভাবে চললে এইডস হওয়ার কোনও সুযোগ থাকার কথা নয়। ট্যুরিস্ট পুলিশ স্পা সংশ্লিষ্ট অবৈধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’

কক্সবাজার নারী কল্যাণ সংস্থার প্রধান শাহেদা পারভীন বলেন, ‘প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য একটা কমিটি করা যেতে পারে। যারা তাদের কর্মীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা দেবে।’

সি পার্ল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা সেন্টারের কর্মকর্তা জিম বলেন, ‘কোনও থেরাপি নিলে কী হয়, তা কাস্টমারকে আগেই বুঝিয়ে দেওয়া এবং কাস্টমারদের মাইন্ড সেটআপে পরিবর্তন আনা দরকার।’

সায়মন বিচ রিসোর্টের কর্মকর্তা এসকে মৌদুদুর রহমান বলেন, ‘গেস্টের বা ক্লায়েন্টের আইডি নিতে হবে।’

হংকং স্পা’র স্বত্বাধিকারী রুপা পাশা বলেন, ‘স্পা করানোর সময় রুমের ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করা যাবে না। কর্তৃপক্ষ যেকোনও সময় প্রবেশ করে মনিটর করতে পারবে এমন ব্যবস্থা রাখতে হবে।’

সুইডিশ থাই স্পা সেন্টারের প্রতিনিধি রিয়া বলেন, ‘স্পা সেন্টারে সেবা প্রদানের সময় নির্ধারণ করে দিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই এইডস প্রতিরোধে সচেতন হওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এ সময় আরও ছিলেন ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার চৌধুরী মিজানুজ্জামান। এছাড়া কক্সবাজারে অবস্থিত ১৬টি স্পা সেন্টারের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।