রাজধানীর যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে নকল চাবি দিয়ে তালা খুলে মোটরসাইকেল চুরির সঙ্গে জড়িত একটি চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। সম্প্রতি ডিএমপির গেন্ডারিয়া থানার একটি মোটরসাইকেল চুরির মামলা তদন্ত করতে গিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ ও বিভিন্ন প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
অভিনব উপায়ে এগুলো চুরির পর কেরানীগঞ্জ, দোহার, মুন্সীগঞ্জসহ ঢাকার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে অল্প দামে বিক্রি করা হতো বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান।
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে দীর্ঘদিন ধরে মোটরসাইকেল চুরি করে আসছিল একটি চক্র। গত কয়েক বছরে এই চক্রের সদস্যরা অন্তত ৫০০ মোটরসাইকেল চুরি করেছে— এমন অভিযোগে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় চক্রটিকে ধরতে অভিযান শুরু করে ডিবির ওয়ারি বিভাগ। চক্রটি ছিল খুবই ধূর্ত। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চক্রের মূল হোতা নূর মোহাম্মদ ও রবিনকে শনাক্ত করা হয়। পরে রাজধানীর শনির আখড়া থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সজল, মনির ও আকাশকে যাত্রাবাড়ীর ধলপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।’
চক্রের মূল হোতা নূর মোহাম্মদকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে মূলত জুরাইন এলাকা থেকে চুরি শুরু করলেও পরে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় চোর চক্র গড়ে তোলে। চক্রের অন্যতম সহযোগী রবিনের মাধ্যমে জিক্সার মোটরসাইকেলের চাবি তৈরি করে সে। চাবি ব্যবহার করে তারা জিক্সার মোটরসাইকেল অনায়াসেই স্টার্ট করতে পারতো। তাদের তথ্যমতে চুরি করা থেকে বিক্রি করা পর্যন্ত বিভিন্ন সদস্য স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করতো। তাদের মধ্যে অন্যতম সজল, মনির ও আকাশ বিশেষভাবে কাস্টমার সংগ্রহ করার দায়িত্ব নিতো এবং তাদের গাড়ি ক্রয়ে উদ্বুদ্ধ করতো।
আসামিরা আরও জানায়, তারা ২০১৫ সাল থেকে মোটরসাইকেল চুরি করে আসছে এবং এ পর্যন্ত ৫০০টিরও বেশি মোটরসাইকেল চুরি করেছে।
গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে। এছাড়া সহযোগী রবিনের বিরুদ্ধে তিনটি এবং অন্য তিন জনের বিরুদ্ধে একটি করে মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
এদিকে মোটরসাইকেল পার্কিংয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে গোয়েন্দা প্রধান বলেন, ‘ঢাকার যেকোনও স্থানে গাড়ি পার্কিং করার ক্ষেত্রে সাবধান হতে হবে। এছাড়া গাড়ি নিজেদের তত্ত্বাবধানে রাখতে হবে। কোনও ধরনের চুরির ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি করে গোয়েন্দা পুলিশকে অবহিত করতে হবে। ডিবি তার অভিজ্ঞতা, তথ্য-প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও কৌশল দিয়ে আপনার মূল্যবান সম্পদ উদ্ধার করে দিতে সর্বদা সচেষ্ট আছে।’