বাংলাদেশের মৎস্য খাতে ৬ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করবে নেদারল্যান্ডস

বাংলাদেশের মৎস্য খাতের টেকসই প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে ৬ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করবে নেদারল্যান্ডস। এ উপলক্ষে বুধবার (৩১ আগস্ট) একটি যৌথ সহযোগিতামূলক চুক্তি সই হয়েছে। বনানীর আফতাব বহুমুখী ফার্মের প্রধান কার্যালয়ে ছিল এই আয়োজন।

বাংলাদেশে দূতাবাসের পক্ষে চুক্তি সই করেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জেনারেল ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশনের উপ-পরিচালক বিরগিট্টা তাজেলার এবং আফতবা বহুমুখী ফার্মসের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান এবং জেমিনি সি ফুডের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন্স) মাহমুদ রিয়াদ চুক্তি সই করেন।

চুক্তির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডস দূতাবাস ও ল্যারিভ ইন্টারন্যাশনালের নেতৃত্বে বুধবার ডাচ ও বাংলাদেশি কোম্পানিগুলির একটি অংশীদারিত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। অংশীদারি প্রতিষ্ঠানগুলো হলো– আফতাব বহুমুখী ফার্মস, জেমিনি সি ফুড, নিউট্রেকো, ভিকন, লাইটক্যাসল পার্টনারস ও ল্যারিভ ইন্টারন্যাশনাল।

চুক্তির আওতায় মাছের প্রজনন ও চাষের জন্য বিভিন্ন ধরনের উন্নত ও টেকসই কৌশল প্রবর্তন ও প্রদর্শনের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো সিলেট, খুলনা এবং কক্সবাজারে তিনটি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করবে। এর আওতায় খামারের বিভিন্ন পণ্য যেমন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, অ্যাকোয়া বিশেষত্ব এবং অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিস্থাপনকারী নিয়ে গবেষণা ও পরীক্ষা চালানো হবে। এর পাশাপাশি মাছের প্রজননকারী ও কৃষকদের প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া হবে।

এছাড়া অংশীদার প্রতিষ্ঠানগুলো ঢাকায় একটি ‘অ্যাকোয়া ফিড লাইন আপগ্রেড’ করবে, যাতে অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদিত বিশেষায়িত মাছের খাবার আগের চেয়ে বাড়ে।

বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের আর্থিক সহযোগিতায় ‘ফুডটেক বাংলাদেশ’ চার বছর পর্যন্ত বাংলাদেশের মৎস্য খামারিসহ কৃষকদের প্রযুক্তিগত ও ব্যবহারিক জ্ঞানের মাধ্যমে বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে অবদান রাখবে।

এই অংশীদারিত্বের আওতায় ১ হাজার ৬০০টির বেশি স্থানীয় মৎস্য খামারি ও কৃষক বিভিন্ন কেন্দ্রে এবং অনলাইন কোর্সের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ পাবেন। এর পাশাপাশি এই অংশীদারিত্ব মৎস্য খামারি ও কৃষকদের সরাসরি বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত করার মাধ্যমে ফসল সংগ্রহে ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত অ্যান ভ্যান লিউয়েন বলেন, ‘বাংলাদেশে ডাচ দূতাবাস আরও টেকসই কৃষি-খাদ্য মূল্য চেইনের উন্নয়নে সহায়তা করে এবং ডাচ কোম্পানিগুলিকে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে স্থানীয়ভাবে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধি, অধিক টেকসই পানি ব্যবহার এবং ডাচ ও বাংলাদেশি বেসরকারি খাতের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করতে অবদান রাখছি।’

ল্যারিভ ইন্টারন্যাশনালের ডিরেক্টর ম্যাথিয়াস ব্রায়েনেন বলেন, ‘বাংলাদেশে মৎস্য চাষকে শক্তিশালী করার জন্য পরিবেশগত এবং সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল উপায়ে অভ্যন্তরীণ উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’

প্রসঙ্গত, ফুডটেক বাংলাদেশ নেদারল্যান্ডস-ভিত্তিক কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান ল্যারিভ ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশ-ভিত্তিক কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান লাইটক্যাসল পার্টনারের সঙ্গে সহযোগিতায় ও নেতৃত্বে রয়েছে। লাইটক্যাসল পার্টনারস প্রকল্পগুলির সমন্বয়ে ল্যারিভকে সহায়তা করছে।