উদ্দেশ্য ‘হিজরত’ কিন্তু গন্তব্য আফগানিস্তান, পাকিস্তান না অন্য কোনও দেশে—এ বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা না নিয়েই বাসা থেকে বের হয়ে যায় কুমিল্লার সাত তরুণ। তারা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। ওই সাত তরুণের পর কুমিল্লা থেকে আরও চার তরুণ বাসা থেকে ‘হিজরতের’ উদ্দেশ্যে বের হয়েছিল। বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে সেই চার তরুণকে আটক করে র্যাব। পরে তাদের ডি-রেডিকালাইজেশনের মাধ্যমে পরিবারের কাছে তুলে দেওয়া হয়। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
র্যাব জানায়, ওই সাত তরুণকে আগে বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। বের হওয়ার পর গন্তব্য বলে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। শুধু বের হওয়ার কথা বলার পরপরই তাদের কথামতো বাসা থেকে বের হয়ে যায় সাত তরুণ। মূলত জঙ্গিবাদের সম্পূর্ণভাবে সংশ্লিষ্ট হওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে তারা বাসা থেকে বের হয়ে যায়।
র্যাব আরও জানায়, আটক চার যুবকের কাছ থেকে সেই সাত তরুণের বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। ‘হিজরতের’ উদ্দেশ্যে বের হয়ে যাওয়ার জন্য কারা তাদের মোটিভেট করতো, এসব বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। আটক চার জন আগে বের হওয়া সাত জনের খুবই ঘনিষ্ঠ ছিল। তারা সব সময় ক্লোজ গ্রুপ ব্যবহার করতো। সেসব গ্রুপেই তারা তথ্য আদান-প্রদান করতো, কথা বলতো। তবে বর্তমানে তারা দেশে অবস্থান করছে নাকি অন্য দেশে রয়েছে, তা নিয়ে গোয়েন্দারা কাজ করছে।
আরও পড়ুন: ৭ পরিবারের কেউ জানে না সন্তানরা কোথায়
যে সাত শিক্ষার্থী পরিবারকে এমন চিঠি দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেছে, তারা সবাই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তো। তাদের মধ্যে চার জনই ভিক্টোরিয়া কলেজের। পরবর্তীতে সন্তানদের সন্ধানের দাবিতে গত ২৫ আগস্ট র্যাবের কাছে একটি আবেদন করে পরিবারের সদস্যরা। পরে র্যাব এ বিষয়ে গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারি বাড়ায়। এরপর ‘হিজরতের’ উদ্দেশ্যে বের হওয়া অন্য চার তরুণকে আটক করে র্যাব।
আটক চার জনের বয়স ১৬ থেকে ১৭-এর মধ্যে। উদ্ধারের পর তাদের মোটিভেশন করানো হয়। পরবর্তীতে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়। তবে তাদের গতিবিধি সম্পর্কে নজর রাখা হচ্ছে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল-মঈন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার পেছনে কাদের মদদদাতাদের শনাক্ত করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, কুমিল্লা বা অন্য কোনও জায়গা থেকে আর কোনও তরুণ বা অন্য কেউ জঙ্গিবাদে জড়িয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছে কিনা, এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়া কিংবা কারও মাঝে কোনও ধরনের পরিবর্তন দেখা গেলে পরিবারকে এসব বিষয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর অনুরোধ করেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।