পর্যটন এলাকায় বিদেশি পর্যটক-সংশ্লিষ্ট পণ্যের ভ্যাট প্রত্যাহারের সুপারিশ

পর্যটন এলাকায় বিদেশি পর্যটক-সংশ্লিষ্ট পণ্যের ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহার চায় সংসদীয় কমিটি। এ বিষয়ে কমিটির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে একটি সুপারিশও করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। শিগগিরই তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) পাঠানো হবে।

জাতীয় সংসদে রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত  বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকের কার্যপত্র থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, কমিটির আগের বৈঠকে দেশের পর্যটন এলাকায় বিদেশি পর্যটকদের যেসব আইটেমের চাহিদা বেশি, সাধারণ পর্যটক যেসব আইটেমের অভাব বোধ করেন এবং সর্বোপরি পর্যটন-সংশ্লিষ্ট সব পণ্যের ওপর থেকে ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহারের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেওয়ার সুপারিশ করে সংসদীয় কমিটি।

সংসদীয় কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ আগস্ট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের (পর্যটন অনুবিভাগ) সভাপতিত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে অর্থ বিভাগ, এনবিআর, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও কাস্টমসের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

ওই বৈঠকের সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরে সংসদীয় কমিটিকে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পর্যটন করপোরেশন বিদেশি পর্যটকদের চাহিদাকৃত ৫০টি অ্যালকোহল বেভারেজ (মদ) ও ৭ ধরনের সিগারেটের তালিকা প্রদান করেছে। পর্যটক করপোরেশন হুইস্কির ওপর ৩৫০ শতাংশ সম্পূরক কর কমিয়ে ২৫০ শতাংশ, বিয়ারে ২৫০ শতাংশের স্থলে ১৫০ শতাংশ কর রাখার প্রস্তাব দিয়েছে। যা এখন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের কাছে রয়েছে। সংস্থাটির মতামত পেলে প্রস্তাবনাটি এনবিআরে পাঠানো হবে বলে কমিটিকে জানানো হয়।

এদিকে বৈঠকে কমিটি পর্যটন এলাকার অনিবন্ধিত হোটেলগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনার সুপারিশ করেছে। একইসঙ্গে কুয়াকাটাসহ অন্যান্য পর্যটন এলাকাগুলোতে অবকাঠামোসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

সংসদ সচিবালয়ে থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ভাঙনরোধ কল্পে অস্থায়ী প্রকল্প হিসেবে জিওটিউব ব্যবহার করে স্পার স্থাপন করে গৃহীত অস্থায়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এর পাশাপাশি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ভাঙন রোধে স্থায়ী প্রতিরক্ষা এবং টেকসই ও পরিবেশবান্ধব সৌন্দর্যবর্ধনের নিমিত্তে জুলাই ২০২২-জুন ২০২৫ মেয়াদে ৩১৪০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পের বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়।

বৈঠকে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সব পর্যায়ের স্টেকহোল্ডার— কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, পর্যটন ও সিভিল অ্যাভিয়েশনের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রকল্পটি পুনরায় পিইসিতে পাঠানোর ব্যাপারে সুপারিশ করা হয়।

কমিটি ইউনেসকো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সুন্দরবনের ভেতর ইকো-টুরিজমের বিকাশ ঘটাতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে আলোচনা করতে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডকে সুপারিশ করে।

কমিটির সভাপতি সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও অংশগ্রহণ করেন কমিটির সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, তানভীর ইমাম, আশেক উল্লাহ রফিক, সৈয়দা রুবিনা আক্তার ও বেগম কানিজ ফাতেমা আহমেদ।