সদ্য ‘নিখোঁজ’ থেকে উদ্ধার হওয়া মরিয়ম মান্নানের মা রহিমা বেগমকে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের বহির্বিভাগে নেওয়া হয়। প্রথমে বহির্বিভাগের চিকিৎসক দেখে তাকে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিলে ভর্তি হন রহিমা বেগম। একটি কেবিন ভাড়া করা হয়। পরে রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, যেহেতু রহিমা বেগমের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি সবার জানা। ফলে কর্তব্যরত নার্স, ফ্লোরের আয়া-খালারা যে যখন কেবিনে ঢুকেছে তারাই তার গল্প শুনতে চেয়েছে। কেউ কেউ ভিডিও ধারণ করেছে। হাসপাতালে এসে যদি মানসিক অস্থিতিশীলতার রোগী সামান্য স্বস্তি না পান, তাহলে যাবেন কোথায়?
ভর্তির কয়েক ঘণ্টা পরই প্রতিবেদক যখন ৭০৭ নম্বর কেবিনে প্রবেশ করেন তখন রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম দুইজন নার্সের সঙ্গে তর্ক করছেন— তারা কেন তার মা কেঁদে কেঁদে যা বলছেন সেগুলো ভিডিও ধারণ করছেন। এসময় নার্স প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে প্রতিবেদকের সামনে বলেন, আমি ডিলিট করে দিয়েছি। ডিলিট করলেও থেকে যায় কিনা মোবাইলে, দেখতে চাইলে তারা কেবিন ত্যাগ করেন। পরে আবারও তারা আসেন এবং দাবি করেন তারা কোনও ভিডিও করেননি। এসময় প্রতিবেদক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালে আবারও ডিউটি নার্স আসেন এবং তারা ঠিক করেননি বলে, অভিযোগ না করার জন্য অনুরোধ করতে থাকে।
নার্সদের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ
এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অভিযোগ নার্সদের দিকে। চিকিৎসা নিতে যারা আসেন, তাদের যখন-তখন ধমক দিয়ে কথা বলার পাশাপাশি রোগীর স্বজনদের সঙ্গেও অসহিষ্ণু আচরণ করেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক রোগীর স্বজন বলেন, আমরা গ্রাম থেকে এসেছি। রোগীর মাথা খারাপ। আমাদের বুঝিয়ে না দিলে সব বুঝিও না। এদের কারোর যেনো সময় নাই। আমাদের অত টাকা-পয়সা থাকলে আমরা তো বেসরকারি হাসপাতালে যাইতাম। টাকা দিলে সব কাজ নাকি ঠিকঠাক হয়। কাকে টাকা দিব সেটাও তো বুঝি না।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারকে ঘটনা সম্পর্কে জানালে তিনি বলেন, এরকম হওয়ার কথা না। আমরা বিষয়টা তদন্ত করে দেখব। এরকম ভিডিও করাটা চিকিৎসার অংশ কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না। এরকম কিছু করার কথা না।