মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশনের মাত্রা নির্ণয়ে হাইকোর্টের বিশেষজ্ঞ কমিটি

স্বাস্থ্য ও পরিবেশ ঝুঁকি বিবেচনায় মোবাইল টাওয়ারের বিকিরণের আন্তর্জাতিক মাত্রা ১০ ভাগের ১ ভাগ নির্ধারণ করা যৌক্তিক কিনা, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক সদস্য মো. কামরুজ্জামানকে আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসি’র পরিচালক মো. গোলাম রাজ্জাককে সদস্য সচিব করে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন আদালত। এই কমিটিকে চার মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এক আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (১৪ নভেম্বর) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

এর আগে মোবাইল টাওয়ার বিকিরণের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে সেই প্রতিবেদন যুক্ত করে ২০১২ সালে উচ্চ আদালতে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ-এইচআরপিবি’র পক্ষে রিট আবেদন করা হয়। এই রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশের পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে।

পরবর্তী সময়ে ওই বিশেষজ্ঞ কমিটি ঢাকার মতিঝিল, গুলশান ও মিরপুর এলাকায় ৬টি মোবাইল কোম্পানির ১৮টি টাওয়ারের বিকিরণ পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করে ২০১৩ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে তিন দফা সুপারিশ করে প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব টাওয়ারের মধ্যে মাত্র একটি টাওয়ারে মাত্রাতিরিক্ত রেডিয়েশন পাওয়া গেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের দেওয়া নির্দেশনার আলোকে বিটিআরসি নীতিমালা করে। পরে আদালতের দেওয়া আদেশে কয়েক দফা এই নীতিমালা সংশোধন করে বিটিআরসি। এই প্রেক্ষাপটে মামলাটি চলমান রেখে ২০১৯ সালের ২৫ এপ্রিল রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। রায়ে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে বিকিরণের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে বলেন আদালত।

তবে বিটিআরসি সম্ভাব্যতা যাচাই না করে নীতিমালা চূড়ান্ত করে তা আদালতে জমা হয়। বিটিআরসির চূড়ান্ত নীতিমালায় বিকিরণের মাত্রা আগের মতো রাখা হয়। তাই এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মত নিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে আদেশ দিলেন আদালত।