ঠিক মধ্য দুপুরে সৈকতে পৌঁছে যান রাশেদ দম্পতি। পানিতে নামার আগে একটু দূরেই স্যান্ডেল-জোড়া রেখে পানিতে নেমে যেই না কয়েক পা হাঁটলেন, হঠাৎ তার পায়ে বিঁধলো কিছু একটা। মুহূর্তে রক্তে ভিজে গেলো পা। বালুর মধ্যে বাঁকা হয়ে পড়েছিল ক্যাপসুলের খোসা। অসতর্ক হয়ে পা পড়ায় এই দুর্ভোগ। দুই দিনের ছুটিতে কক্সবাজার গিয়ে আর একবারের জন্যও সৈকতে যাওয়া হলো না এই নবদম্পতির।
কেবল ক্যাপসুলের খোসা না, চিপসের প্যাকেট, বিস্কুটের ঠোঙা, গোসলের জন্য আনা কাপড় রাখার পলিথিনের ছেঁড়া ব্যাগ, ছেঁড়া স্যান্ডেল—কী নেই এই সৈকতে। ফলে শুধু যে অপরিচ্ছন্ন তা-ই নয়, পুরো সৈকত বিপজ্জনকও বটে। চারপাশে অসংখ্য ময়লার স্তূপ। কক্সবাজার প্রশাসন বলছে, এখন পরিস্থিতি আগের তুলনায় ভালো। প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী পুরো এলাকা পরিষ্কারের দায়িত্বে নিয়োজিত। যদিও সারা দিন নানা সময়ে সৈকত পরিদর্শনে গিয়ে ময়লা এলোমেলো অবস্থায় ছড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। আর সৈকত থেকে কিছুটা দূরে মাসের পর মাস জমা হচ্ছে ডাবের খোসা, পলিথিনের বর্জ্য। পরিবেশবাদীরা বলছেন, বিভিন্ন সময়ে নেওয়া উদ্যোগগুলো কাজে আসছে না। এই বিষয়টি প্রশাসন যতদিন স্বীকার না করবেন, ততদিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পারবেন না।
কেন এত ধরনের উদ্যোগের পরেও পরিচ্ছন্ন একটি সৈকত পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না প্রশ্নে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটা কন্টিনিউয়াস প্রসেস। লাখ লাখ মানুষ আসে, নোংরা করে। আমরা পরিষ্কার করি। নানারকম প্রচারণারও ব্যবস্থা আছে। এই মানুষগুলোই বিদেশে গিয়ে যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলে না, নোংরা করে না। নিজের দেশে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা যায় না কেন, প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘অন্য দেশে লোক কম, একজন
এদিকে পরিবেশ অধিদফতরের কি কোনও দায়িত্ব নেই? এমন প্রশ্নে কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘কাজটি আমাদের না। জেলা প্রশাসনের অধীন বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি এটি তদারকি করে। আর ময়লা ব্যবস্থাপনা স্থানীয় প্রশাসন মানে পৌরসভা দেখে। পরিবেশের দূষণ ঘটছে, সেখানে অধিদফতরের হস্তক্ষেপের সুযোগ আছে কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা পরামর্শ দিই। মূলত ইকোলজিক্যাল রিসোর্সের ক্ষেত্রে অবৈধ কিছু ঘটলে আমরা উদ্যোগী হই। যেহেতু টুরিস্ট স্পট, তাই বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি দেখে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য যে অভ্যাস হওয়া দরকার, তা গড়ে ওঠেনি। বিচে অনেক ব্যবস্থা আছে সেটা মানছে না। আগামীতে আমরা কিছু ডিসপ্লে বোর্ড লাগিয়ে সচেতনতা বার্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে যাচ্ছি।’