সিটিটিসি’র দাবি

ছিনতাইকাণ্ডের সমন্বয় করে অমি, জঙ্গিদের হাতে তুলে দেয় মোটা অঙ্কের টাকা

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ঢাকা সিএমএম আদালত চত্বর থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন মেহেদী হাসান অমি ওরফে রাফি (২৪), এই তথ্য জানিয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ (সিটিটিসি)। বিশেষায়িত এই ইউনিট আরও দাবি করেছে, জঙ্গিদের টার্গেট ছিল হাজিরা দিতে আসা ১২ সদস্যদের মধ্যে চার জনকে ছিনিয়ে নেওয়া। এই চার জনের মধ্যে প্রধান টার্গেট ছিল আরাফাত রহমান ওরফে সিয়াম ওরফে শামস। তবে ওই দিন পালানোর সময় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বুধবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে তাকে (২৪) গ্রেফতার করে সিটিটিসি। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বেলা ১২টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের (সিটিটিসি) প্রধান মো. আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানান। এ উপলক্ষে রাজধানীর মিন্টো রোড মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

সিটিটিসি’র ব্রিফিং

সিটিটিসি প্রধান জানান, ছিনতাই করা সদস্যদের চলাফেরার (হাতখরচ) জন্য মোটা অংকের টাকাও সেদিন আদালতে নিয়ে যায় অমি ওরফে রাফি। ছিনতাইয়ের দিন পালিয়ে যাওয়া জঙ্গিদের মোটা অঙ্কের টাকা হাতখরচ দেয় সে।

তিনি বলেন, আনসার আল ইসলামের শীর্ষ নেতা বরখাস্তকৃত মেজর জিয়ার সঙ্গে সমন্বয় করে সংগঠনের আসকরি শাখার সদস্যদের রিক্রুট করতো অমি। এদের মধ্যে ছিল ছিনতাই করা পলাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি আসামি মইনুল হাসান শামিম সিফাত সামির ইমরান (২৪) এবং মামলার এজাহার নামীয় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোজাম্মেল হোসেন সাইমন (২৫) যার সাংগঠনিক নাম-শাহরিয়ার।

আদালত পাড়া থেকে পুলিশের ওপর হামলা করে জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। এই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে ছিলেন অমি। জেলে অবস্থান করা সদস্যদের সঙ্গে বাইরের ছিনতাইয়ের নেতৃত্বে থাকা সদস্যদের মধ্যে যোগাযোগ রাখতেন তিনি। গ্রেফতার মেহেদী হাসান অমি সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার আসামিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে আসছিলেন।

অমির বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে ডিএমপির মোহাম্মদপুর, সূত্রাপুর এবং বাড্ডা থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে তিনটি মামলা হয়। এছাড়াও ২০১০ এবং ২০১২ সালে সিলেট কোতোয়ালি থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দুটি মামলা রয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে ডিএমপির কোতোয়ালি থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আরও একটি মামলা করা হয়েছে।

রবিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে পুরান ঢাকার জনাকীর্ণ আদালত থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের (আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) নেতা মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান এবং আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাবকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তাদের সহযোগীরা। এই জঙ্গিদের খোঁজে সারা দেশে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশ সদর দফতর ও ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

আরও পড়ুন-