গুলশানে সামাজিক বন্ধন তৈরিতে বাসিন্দাদের উৎসব

রাজধানী ঢাকার বাসিন্দারা চাকরি, ব্যবসা বা বিভিন্ন কাজে ব্যস্ততার মধ্যে দিন পার করে। একই ভবনে অবস্থান করলেও এক বাসার বাসিন্দা পাশের বাসার বাসিন্দাদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ না থাকায় বন্ধনও গড়ে ওঠে না। তাই সামাজিক পরিচিত ও বন্ধন সুদৃঢ় করতে পাড়ার বাসিন্দাদের নিয়ে পাড়া উৎসবের আয়োজন করেছে গুলশান সোসাইটি ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।

শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) গুলশান-২ এলাকার ৬০, ৬১ ও ৬২ নম্বর রাস্তায় এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। উৎসবে বাসিন্দাদের পাশাপাশি অংশ নেন কূটনীতিক পাড়ার বাসিন্দারাও।

আয়োজনে শিশু-কিশোরদের খেলাধুলা, বয়স্কদের বিনোদন ও কেনাকেটা, পিঠা উৎসব, জাদু দেখানো, বই উৎসব, কমেডি, গানের আয়োজনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান দিয়ে সাজানো হয় উৎসব।

তাদের সঙ্গে যোগ দেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম। তারা বিভিন্ন প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন এবং বাসিন্দাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

গুলশান সোসাইটির মহাসচিব সারওয়াত শুক্লা সিরাজ বলেন, ‌গ্রামের মানুষের মধ্যে যেমন সুন্দর সামাজিক যোগাযোগ ও বন্ধন রয়েছে, সেটা তৈরি করাই হচ্ছে এ অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য।

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আজ সাপ্তাহিক ছুটি। আজ গুলশানের সবার বাসায় বসে থাকার কথা ছিল কিন্তু আজ সবাই বাসা থেকে বেরিয়ে এসে এ উৎসবে যোগ দিয়েছে। তারা একে অন্যকে জিজ্ঞেস করছে, ‘তুমি কই থাকো?’ এই মিলনমেলার মাধ্যমেই একটি বন্ধন তৈরি হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই একটা সুন্দর সামাজিক বন্ধন ও একটি সুন্দর সমাজ। আমরা চাই সুস্থ সামাজিক চর্চা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ। কিন্তু আমরা পারছি না। আমরা গান গাই আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি বলেই ময়লাটা রাস্তায় ফেলে দিই, লালবাতি জ্বলার পরও আমরা রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে দিই। এ বিষয়গুলো মাথায় রেখেই এ পাড়া উৎসব।’

শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এই উৎসব রাত পর্যন্ত চলবে বলে জানান মেয়র আতিকুল ইসলাম।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘উন্নত বিশ্বের মতো ঢাকাকেও সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এ আয়োজনটি গ্রামের উৎসব ঢাকা শহরে ফিরে নিয়ে এসেছে। এখানে কোনও প্রতিযোগিতা নেই, আছে হৃদ্যতা। প্রতিবেশীদের সঙ্গে সৌহার্দপূর্ণভাবে বসবাস করতে এ ধরনের উৎসব আয়োজন ভূমিকা রাখবে।’

পরে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম উৎসবে আসা বাসিন্দাদের উদ্দেশে খোলা ট্রাকে এডিস মশার উৎসস্থলের প্রদশর্নীর মাধ্যমে ডেঙ্গু সচেতনতা কার্যক্রমে অংশ নেন।