রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে যেসব প্রভাবশালী ব্যক্তি ট্যাক্স দেন না এবং যাদের কাছে বিপুল পরিমাণ বকেয়া রয়েছে, তারা আর কোনও ছাড় পাবে না বলে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। তিনি বলেছেন, ‘স্বপ্রোণোদিত হয়ে তারা ট্যাক্স না দিলে সিটি করপোরেশনের লোকজন তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিরক্ত করবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।’
রবিবার (১১ মে) ঢাকার গুলশানে আয়োজিত ‘পৌরকর মেলা ২০২৫’ উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন ডিএনসিসি প্রশাসক।
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘সাধারণ মানুষ কর দিতে চায়, তবে প্রক্রিয়া জটিল মনে হওয়ায় অনেকে আসে না। এবার আমরা এই সমস্যা সমাধান করেছি। ঘরে বসেই অনলাইনে পৌরকর দেওয়া যাবে।’
তিন জানান, ডিএনসিসির অঞ্চলভিত্তিক গণশুনানিতে দেখা গেছে, নাগরিকদের রাস্তা, ড্রেনেজ ও সড়কবাতির চাহিদা রয়েছে, তবে সে অনুযায়ী রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। নতুন সংযুক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের বেশিরভাগই কর তালিকায় নেই। অনেক আবাসিক এলাকাও বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, কিন্তু রাজস্ব পাচ্ছে না সিটি করপোরেশন।
প্রশাসক উদাহরণ হিসেবে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা কর প্রদান করতে সম্মত হয়েছে। নতুন ১৮টি ওয়ার্ডেও গণশুনানির মাধ্যমে নাগরিকদের কর প্রদানে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। মেলায় এসে কর দিলে এক টেবিলেই সব সমস্যা সমাধান করা যাবে।’
ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ‘কিছু করপোরেট প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে ট্যাক্স দেয় না। তারা সিটি করপোরেশন থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা গ্রহণ করে অথচ ট্যাক্স প্রদান করে না, এটা অনৈতিক।’
উদাহরণ হিসেবে তিনি ইউনাইটেড হাসপাতাল, রেনেসাঁস হোটেল, ওয়েস্টিন হোটেল এবং কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলেন, যাদের কাছে ২০-৩০ কোটি টাকা পর্যন্ত ট্যাক্স বকেয়া রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘কর তালিকায় থাকা প্রায় ২৫ হাজার ব্যক্তির কাছে এক লক্ষাধিক টাকা বকেয়া রয়েছে। কর তালিকার বাইরেও এর পাঁচগুণ বেশি লোক রয়েছেন। মেলা শেষে এসেসমেন্টের মাধ্যমে তাদের তালিকাভুক্ত করা হবে।’
এবার পৌরকর মেলায় ৭.৫ শতাংশ রিবেটের সুবিধা রাখা হয়েছে। হয়রানি এড়াতে অনলাইন পোর্টাল খোলা রাখা হয়েছে। ঘরে বসেই ট্রেড লাইসেন্স এবং হোল্ডিং ট্যাক্স দেওয়া সম্ভব হবে।
প্রশাসক বলেন, ‘ঢাকাকে উন্নত করতে হলে সিটি করপোরেশনকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে হবে। অবকাঠামো উন্নয়নে নাগরিকদেরও কর দিতে হবে। ঢাকাকে বদলাতে চাইলে, আমাদের সঙ্গে থাকতে হবে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল্লাহসহ ডিএনসিসির কর্মকর্তারা।