রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি আবশ্যক

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর টেকসই স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং রোম সংবিধি স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রপক্ষগুলোকে দৃঢ়ভাবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াতে হবে।

শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) হেগে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের (আইসিসি) ২১তম বার্ষিক সমাবেশ চলাকালীন সময়ে একটি সাইড ইভেন্টে বক্তারা এ কথা বলেন। নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশ দূতাবাস, গাম্বিয়া সরকার এবং নো পিস উইথআউট জাস্টিস যৌথভাবে ‘রোহিঙ্গাদের জন্য ন্যায়বিচার’ শিরোনামের একটি সাইড ইভেন্টের আয়োজন করে।

দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ, আইসিসির ডেপুটি প্রসিকিউটর নাজহাত শামীম খান, বার্মা রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন ইউকে’র প্রেসিডেন্ট তুন খিন, রাখাইন রাজ্যের উপদেষ্টা কমিশনের সাবেক সদস্য ল্যাটিশিয়া ভ্যান ডেন অ্যাসুম এবং গাম্বিয়ান সলিসিটর জেনারেল হুসেইন থমাসি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

রাষ্ট্রদূত হামিদুল্লাহ বলেন, ‘টেকসই সমাধানের জন্য মিয়ানমারের নতুন ফেডারেল কাঠামোর মধ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিয়ানমারের অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যাগুলি অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। আঞ্চলিক গোষ্ঠী, সুশীল সমাজ, থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক, আসিয়ান অঞ্চলের নেতাদের এ অঞ্চলের যৌথ স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের পরিস্থিতির দিকে নজর দেওয়া দরকার। মানবিক সহায়তার পাশাপাশি রাজনৈতিক সমাধানে সমানভাবে নজর দেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।’

রোহিঙ্গা নেতা থুন খিন রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের মাটিতে স্থান দেওয়া এবং রোহিঙ্গাদের পক্ষে ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। তিনি রোহিঙ্গাদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিতে আর্জেন্টিনার আদালতে চলমান মামলার ওপর আলোকপাত করেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ডেপুটি প্রসিকিউটর নাজহাত খান রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্তের আইসিসি মামলার তদন্তের অগ্রগতি তুলে ধরেন।

গাম্বিয়ান সলিসিটর জেনারেল বলেন, ‘গাম্বিয়া নিজেই দুই দশকের স্বৈরাচারী শাসনের শিকার হয়েছে। তাই তারা গণহত্যা কনভেনশনের সদস্য হিসেবে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা লড়ছে।’

রাষ্ট্রদূত ল্যাটিশিয়া আসুম বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পর থেকে দুই বছর ধরে মিয়ানমারের স্থল পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে। বেশিরভাগ আসিয়ান দেশের সঙ্গে মিয়ানমারের স্থল সীমানা নেই। তাই তারা রোহিঙ্গাদের নিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলির ওপর যে বোঝা সেটা উপলব্ধি করে না।’