‌‘সংকট অভিবাসনে নয়, সহযোগিতায়’

অভিবাসন খাত একটি ক্রান্তিকালে রয়েছে। কারণ অনেক অপ্রত্যাশিত শক্তি একসঙ্গে সক্রিয়। কোনও অভিবাসী সংকট নেই। শুধু সহযোগিতার সংকট ও সহানুভূতির অভাব। অভিবাসন কোনও ঝুঁকি বা সমস্যা নয়; বরং এটি সমাধানগুলোর একটি উপাদান।

শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে সেন্টার ফর মাইগ্রেশন স্টাডিজের (সিএমএস) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘সংকটকালে অভিবাসীদের অবস্থা’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সেমিনারে এসব কথা বলেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) পলিসি অ্যাডভাইজার অধ্যাপক শহীদুল হক।

শহীদুল হক সুপারিশ করে বলেন, ‘বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য গঠনমূলক কথোপকথন এবং অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি উদ্ভাবনী অভিবাসন এবং গতিশীলতা ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য। অভিবাসন-সম্পর্কিত সমস্যাগুলোকে আন্তর্জাতিক মান ও অনুশীলনের মধ্যে পরিচালনা করা উচিত। অঞ্চলের প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় নেওয়া উচিত এবং অভিবাসীদের সব কর্মের কেন্দ্রবিন্দু হওয়া উচিত।’

সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (এসআইপিজির অধীন সেন্টার ফর মাইগ্রেশন স্টাডিজের (সিএমএস) লক্ষ্য হলো অভিবাসন-সম্পর্কিত জ্ঞানের উৎস এবং অভিবাসীদের জন্য মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার অর্জনের উপায় বের করা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন।

তিনি বলেন, অভিবাসন ও অভিবাসীরা আমাদের অস্তিত্বের অংশ। অতএব, শিক্ষা ও গবেষণায় অভিবাসন বিষয়ক অধ্যয়ন অপরিহার্য। তিনি আশা করেন যে এই কেন্দ্রটি উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ হবে এবং অভিবাসন সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করবে।

আইওএমের মিশন প্রধান আবদুসাত্তর এমরোভ বলেন, অভিবাসীরা তাদের উৎপাদনশীলতা তিন গুণ বাড়িয়ে দিতে পারে, যখন অভিবাসনের জন্য তাদের গ্রহণকারী দেশগুলোর নীতিগুলো উপকারী হয়। তিনি আরও বলেন, নারী অভিবাসীরা পুরুষ অভিবাসীদের তুলনায় বেশি কষ্ট শিকার করেন।

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী ও জাতিসংঘের কান্ট্রি টিমের সিনিয়র মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান বলেন, ‘আমরা, দক্ষিণ এশীয়রা সারা বিশ্বে অভিবাসীদের বংশধর এবং আমাদের এটাকে গর্বের বিষয় হিসেবে দেখা উচিত। আমরা কিছু জাতিকে অভিবাসী গ্রহণকারী দেশ এবং অন্যকে অভিবাসী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বিবেচনা করি। সব দেশে অভিবাসী এবং তাদের পরিবারের মানবাধিকার রক্ষা করার জন্য, আমাদের এই বাইনারির বাইরে চিন্তা করতে হবে।’

এনএসইউর সহ-উপাচার্য অধ্যাপক এম ইসমাইল হোসেন, মাইগ্রেশন স্টাডিজের ওপর একাডেমিক সেন্টারের গুরুত্বের ওপর জোর দেন এবং আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে সিএমএস তার সুনাম বজায় রাখবে এবং ভবিষ্যতে আরও সফল হবে।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন সিএমএস ডিরেক্টর অধ্যাপক এস কে তৌফিক এম হক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এনএসইউ সিএমএস সমন্বয়কারী এবং সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন সিকদার।

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির স্কুল অব হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সের ডিন অধ্যাপক আবদুর রব খান অনুষ্ঠানের সমাপ্তিতে ধন্যবাদ দেন। সেমিনারে শিক্ষাবিদ, গবেষক, কূটনীতিক, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের সদস্যরা এবং শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।