পরিবেশবাদীদের চাপ অব্যাহত থাকুক: আতিউর রহমান

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক আতিউর রহমান বলেছেন, ‘আমি নিজে যেমন পরিবেশবাদী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, তেমনি সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। আমি যখন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ছিলাম, তখন অনুভব করেছি, এই ধরনের দাবিগুলো যত স্বোচ্ছার হয়, তখন অনেক ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকতে আমি অনেকগুলো সবুজ শক্তির প্রকল্প গ্রহণ করতে পেরেছিলাম। সুতরাং আপনাদের চেষ্টায় এই আন্দোলন এগিয়ে যাবে।’

শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (পবা) ও বাংলাদেশ এনবারয়নমেন্ট আন্দোলন (বেন) আয়োজিত পরিবেশ সমাবেশ উপস্থিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ আমাদের সমাজ। সমাজ যখন সচেষ্ট থাকে, তখন অন্যন্য যে অসংগতি-অবিচার-অন্যায় থাকে, সেগুলোকে প্রতিবাদ করা যায়, সেগুলো সংশোধন করা যায়। সামাজিক সম্পদ তৈরি হয় যখন মানুষ একে অপরের কাছাকাছি আসে, সংগঠিত হয়। এই সংগঠিত মানুষ যখন প্রাণের কথা বলে, পরিবেশের কথা বলে, তখন সমাজে একধরনের সক্রিয়তা তৈরি হয়। সেই সক্রিয়তা শেষ পর্যন্ত আমাদের বেঁচে থাকার উপায়গুলোর কথা বলে।’

সমাবেশে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান দেশে প্রথমবারের মতো এই রকম পরিবেশ সমাবেশ আয়োজন করার জন্য বাপা ও বেনেকে ধন্যবাদ ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সেটি হলো তিনি জাতিসংঘের অধিবেশনে একটি বক্তব্য উপস্থাপন করে বলেছিলেন, বিশ্ববাসীর উচিত হবে একটি ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ডিং’ তৈরি করা। কপ-২০ সম্মেলন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এটা বিশ্ববাসীর জন্য খুবই আশাব্যাঞ্জক দিক।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, ‘বেঁচে থাকার জন্য পানি ও প্রাণপ্রকৃতির দরকার হয়। প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশের অব্যাহত ক্ষয়, বিপর্যয় মানুষের জীবনের অস্তিত্বকেই বিপন্ন করে তুলেছে। আমরা যখন বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে কথা বলি, তারা প্রথমেই পরিবেশদূষণের কথা বলেন। ইটভাটা, অপরিকল্পিত বিদ্যুৎকেন্দ্র এসব কারণে পরিবেশদূষণ বাড়ছে, নানা সংকট বাড়ছে। আজ ঢাকার মতো জায়গায় সামান্য খেলার মাঠের জন্যও লড়াই করতে হচ্ছে। সর্বশেষ ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কও ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে, সেখানে কন্সট্রাকশন গড়ে তোলা হচ্ছে।’

এ সময় বাপার সহসভাপতি বজলুল হকের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন ঢাবি অধ্যাপক এম এম আকাশ, অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জামান, বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানসহ আরও অনেকে।

এর আগে বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার সমাবেশের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এরপর শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বেনের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম।